রংপুর: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিনকে (৫২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত ৯টায় রংপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পাশে কেরামতিয়া মসজিদের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, তুহিন রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২-এ দীর্ঘদিন পিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তুহিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং জুলাই অভ্যুত্থানের পর তার পিপিশিপ বাতিল হয়েছে, যদিও তিনি আদালতে মামলা পরিচালনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি রংপুর মহানগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, মহানগর আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য ও অর্থদাতা ছিলেন। কোতোয়ালী থানায় দুটি এবং তাজহাট থানায় একটি মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি। গত বছরের ১০ অক্টোবর কোতোয়ালী ও তাজহাট থানায় এবং এ বছরের ৯ মে কোতোয়ালী থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, বুধবার দিনভর রংপুরে বিভিন্ন মামলা পরিচালনা করে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন তুহিন। রাতে আদালত চত্বর থেকে বেরিয়ে মসজিদের সামনে পৌঁছাতেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এবং মোটরসাইকেলসহ কোতোয়ালী থানায় নিয়ে যায়।
তুহিনের সহকারি রবিউল ইসলাম বলেন, “বিদায় দিয়ে চলে আসার পরপরই খবর পাই পুলিশ তাকে আটক করেছে। আমি থানায় গিয়ে দেখি, মোটরসাইকেল ও কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে।”
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, “মামলার প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।”
জানা গেছে, তুহিনের গ্রেফতারের পটভূমি হিসেবে তার সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্ট উল্লেখযোগ্য। ২০১৬ সালের ২১ অক্টোবর রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি সাফিউর রহমান সফি ও সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডলের সঙ্গে তার ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন তুহিন। মঙ্গলবার সেই ছবি পুনরায় শেয়ার করে লিখেছিলেন, “২০১৬ সালে ঢাকায় তোলা ছবি।” এর পরদিনই গ্রেফতার হয়।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর সাফিউর রহমান সফি আত্মগোপনে রয়েছেন এবং তুষার কান্তি মণ্ডল গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সাভার থেকে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন।