ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সদর উপজেলার আনন্দবাজার সংলগ্ন পুরাতন বাঁশবাজার এলাকায় খাস জমির সীমানা নির্ধারণ করতে গিয়ে সরকারি কর্মকর্তারা হামলার শিকার হয়েছেন।
বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে সীমানা নির্ধারণের সময় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে উপজেলা প্রশাসন ও ভূমি কার্যালয়ের অন্তত ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আহত হন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন সদর ইউএনও’র কার্যালয়ের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম ও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মফিজুল কবীরসহ আরও অনেকে। আহতদের উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
জানা গেছে, জেলা শহরের আনন্দবাজার সংলগ্ন পুরাতন বাঁশবাজারের ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত প্রায় ২১ শতাংশ জমি সরকারিভাবে হাট-বাজার শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত। সম্প্রতি এ জমির মধ্যে ২০ দশমিক ৯৪ শতাংশ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৩ জনের নামে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ইউএনও সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঁইয়ার নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসনের একটি দল জমির সীমানা নির্ধারণে গেলে, কান্দিপাড়া মাইমলহাটি এলাকার ব্যবসায়ী আবুল হাসনাত ওরফে ভজনের নেতৃত্বে শতাধিক লোক অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় সরকারি কর্মচারীদের মারধর করা হয় এবং কাজে বাধা দেওয়া হয়।
এদিকে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেল পাঁচটার দিকে কান্দিপাড়ার মাইমলহাটি এলাকায় জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন অভিযুক্ত ব্যবসায়ী আবুল হাসনাত ভজন। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই জায়গায় গাড়ি লোড-আনলোড করে ব্যবসা চালিয়ে আসছি। বন্দোবস্তের নামে রাজনৈতিকভাবে প্রভাব খাটিয়ে জায়গা দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। বন্দোবস্ত বাতিল না হলে আমরা আন্দোলনে যাব।’
তবে ইউএনও সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঁইয়া বলেন, ‘সরকারি খাসজমি নিয়ম অনুযায়ী বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। জমির সীমানা নির্ধারণ করতে গেলে সরকারি কর্মচারীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে।’
হামলার ঘটনার পর বিকেলে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে আনন্দবাজার তোহা বাজার এলাকায় অবৈধ দখলে থাকা দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ করে। তিতাস নদীর পাড়ঘেঁষে চলাচলের রাস্তা দখল করে রাখা মাছ ব্যবসায়ীদের স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঁইয়া। অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন তানজিনুর রহমান, জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মানস দাস, র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।