পঞ্চগড়: গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকার টিএনটি বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজীকে নিখোঁজের একদিন পর পঞ্চগড় থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) ভোরে উপজেলা সদরের হেলিপ্যাড এলাকায় সড়কের পাশে একটি গাছের সঙ্গে শেকলে পা বাঁধা বিবস্ত্র অবস্থায় মহিবুল্লাহকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা।
পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির পথে। তবে কথা বলতে পারলেও বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না তিনি।
হাসপাতালের বিছানায় মুফতি মহিবুল্লাহ সংবাদকর্মীদের জানান, বুধবার (২২ অক্টোবর) ফজরের নামাজের পর হাঁটতে বের হলে একটি এম্বুলেন্সে করে পাঁচজন এসে তার মুখে কাপড় চেপে তুলে নিয়ে যায়। তারপরে তাকে অমানবিক নির্যাতন করে তারা। তাদের মুসলমান বা হিন্দু মনে হয়নি। তাদের বাংলাদেশীও মনে হয়নি। তারা প্রমিত বাংলা, শুদ্ধ বাংলায় গালাগাল করছিলেন।
তিনি জানান, তাকে ইসকনের চিন্ময় চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর জামিনের বিষয়ে কথা বলতে বলা হয়েছিল। কয়েক মাস ধরেই চিঠির মাধ্যমে তাকে ইসকনের বিরুদ্ধে কথা না বলতে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছিল। এমনকি ইসকনের পক্ষে কথা বললে তাকে এক কোটি টাকার দেওয়ারও প্রস্তাব দেন। সর্বশেষ ২১ তারিখের একটি চিঠিতে এনসিপি, বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলতে নিষেধ করা হয়। তাদের কথা না শুনলে হত্যারও হুমকি দেওয়া হয়। চিঠিতে বাংলাদেশকে বাংলাদেশ না বলে পূর্ব বঙ্গ বলতে বলা হয় এবং বারবার অখণ্ড ভারতের পক্ষে কথা বলার জন্য বলা হয়েছে। এসময় তিনি ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা দাবি করেছেন।
খবর পেয়ে পঞ্চগড়সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আলেম-ওলামারা তাকে দেখতে হাসপাতালে ভিড় করেন। ঘটনার প্রতিবাদে দুপুরে পঞ্চগড় শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষনা দিয়েছে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতারা।
পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এর আগে তার জটিল অপারেশন হয়েছিল। এছাড়া তিনি ডায়েবেটিসের রোগী। তাকে যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ভোরের দিকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি। টঙ্গী থানা এবং তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এলেই আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাদের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হবে। কে বা কারা তাকে অপহরণ করেছে এটা তদন্তের বিষয়।