ফরিদপুর: পারিবারিকভাবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বৃহস্পতিবার বরযাত্রীসহ স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফেরে মো. জামাল ফকির (২৮)। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতে নবদম্পতিকে পাঠানো হয় বাসরঘরে। সকালে আখক্ষেতে বাঁশের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় বর জামাল ফকিরের লাশ।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের পিসনাইল গ্রামের মাঠে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
তবে, বরের এই মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের দাবি, জামাল গলায় গামছা পেচিয়ে আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের আড়ার সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। আর স্থানীয়রা বলছেন, আখক্ষেতের বেড়ার ওই বাঁশের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করা অসম্ভব।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে পারিবারিকভাবে পাশ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলার পুরাপাড়া ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের মো. লিটন ভূইয়ার মেয়ে রোকেয়া আক্তারকে (২৩) বিয়ে করেন জামাল ফকির। বিকেলে কনেকে নিয়ে বাড়িতে আসেন বর। রাতে নবদম্পতি বাসরঘরে শুয়ে ছিলেন।
শুক্রবার সকালে পিসনাইল গ্রামের মাঠে নিজ বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সঙ্গে গলায় গামছা পেচানো অবস্থায় বর জামালের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয় কৃষকরা। পরে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে লাশটি নামিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
স্থানীয়রা জানান, গলায় গামছা পেচানো অবস্থায় আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের যেভাবে মরদেহ ঝুলে ছিল, তাতে মনে হয় না সে আত্মহত্যা করেছে। কারণ বাঁশের আড়ার উচ্চতা ছিল দুই থেকে আড়াই ফিট। সেখানে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে পা মাটিতে মিশে যাবে।
নববধূ রোকেয়া বলেন, ‘সকালে মানুষের চিৎকার শুনে দরজা খুলতে গেলে দেখি দরজার বাইরে শেকল লাগানো। পরে প্রতিবেশীরা দরজা খুলে দিলে বের হই।’
নিহতের বড় ভাই জালাল ফকির বলেন, ‘আমার ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যজনক। সে কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা করেনি। ঠিক কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, বুঝে উঠতে পারছি না।’
এদিকে, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আতাউর রহমান।