Saturday 25 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অমর ভালোবাসার দৃষ্টান্ত
স্ত্রীর মৃত্যুশোক সইতে না পেরে একই দিনে প্রাণ গেল স্বামীর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৫ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:১০ | আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৩৫

জলিলুর রহমান জলিল ও তার স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম। ছবি: সারাবাংলা

নওগাঁ: ভালোবাসার গল্প কখনও শেষ হয় না—মৃত্যুতেও নয়। এমনই এক হৃদয়বিদারক, অথচ অনন্য এক ভালোবাসার ঘটনার জন্ম দিয়েছে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কাদিবাড়ী গ্রামের এক দম্পতি। স্ত্রীর মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে মাত্র ১১ ঘণ্টা পর মারা গেছেন তার স্বামী। জীবনের মতো মৃত্যুতেও তারা একসঙ্গে রয়ে গেলেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাদিবাড়ী গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. জলিলুর রহমান জলিল (৭৫) এবং তার স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম (৬৫) দীর্ঘ ৪৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে ছিলেন একে অপরের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী। পরস্পর ছাড়া একদিনও থাকতে পারতেন না তারা। জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না—সবকিছুই ভাগাভাগি করে কাটিয়েছেন দু’জনে।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু হঠাৎ করেই সেই অটুট সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায় শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আঞ্জুয়ারা বেগম। স্ত্রীর মৃত্যু সংবাদ শোনামাত্র ভেঙে পড়েন জলিল মাস্টার। বিকেল থেকেই তার শরীর খারাপ হতে থাকে। রাতে গুরুতর অবস্থায় তাকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ২৫ মিনিটে (শনিবার) তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

একই দিনে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুতে পুরো কাদিবাড়ী গ্রামজুড়ে নেমে আসে গভীর শোক। সকাল থেকে অসংখ্য মানুষ ছুটে যান তাদের বাড়িতে। কেউ চোখের পানি মুছতে পারেননি। দুইটি কফিন পাশাপাশি রাখা দেখে অনেকেই বলেন, ‘জীবনে একসঙ্গে ছিলেন, মৃত্যুতেও একসঙ্গে গেলেন।’

ছোট ছেলে রাকিবুল হাসান রকি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘মা-বাবা ছিলেন আমাদের পৃথিবী। মা মারা যাওয়ার পর বাবার চোখে একফোঁটা ঘুম ছিল না।’ তিনি শুধু বলছিলেন, ‘‘তোমার মাকে ছাড়া আমি বাঁচব না।’ ঠিক তাই হলো।”

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের ভালোবাসা ছিল সত্যিকার ও নিঃস্বার্থ। একে অপরকে ছাড়া তারা কিছুই ভাবতে পারতেন না। তাই হয়তো একজন চলে যাওয়ার পর আরেকজনের পক্ষে থাকা সম্ভব হয়নি।’

শনিবার সকালে গ্রামের কবরস্থানে স্বামী-স্ত্রীকে পাশাপাশি দাফন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর