গাজীপুর: গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি ও গাজীপুর–২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. শওকত হোসেন সরকার তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ‘চাঁদাবাজির ভিডিও’কে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বিকৃত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে গাজীপুর প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
শওকত হোসেন সরকার জানান, ভিডিওটি নিয়ে তিনি ইতোমধ্যে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত–৫ এ আফজাল হোসেনকে আসামি করে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি পবিত্র ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরে জানতে পারি, আমার নামে ১০ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়ানো হয়েছে। গাড়ি বিক্রির স্বাভাবিক লেনদেনকে বিকৃত করে চাঁদাবাজির ভিডিও হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, একপেশে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
বিএনপি নেতা জানান, তার ছেলের প্রতিষ্ঠান ‘এম/এস কার সাম্রাজ্য’ থেকে ২০২৪ সালের ২৮ জুলাই আফজাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি ৪০ লাখ টাকায় একটি নোয়া স্কয়ার গাড়ি ক্রয় করেন। সে সময় ১০ লাখ টাকার চেক জামানত রেখে গাড়ি হস্তান্তর করা হয়, পরে ব্যাংক ঋণ নিয়ে বাকি টাকা পরিশোধ করেন। এই টাকা দেওয়ার সময় আফজাল গোপনে ভিডিও ধারণ করেন এবং পরে সেটি বিকৃতভাবে প্রচার করেন—যেন সেটা চাঁদাবাজির লেনদেন।
শওকত হোসেনের দাবি, বর্তমানে নিজেকে ‘জিয়া মঞ্চের সভাপতি’ পরিচয় দেওয়া আফজাল হোসেন অতীতে গাজীপুর মহানগর যুবলীগের কর্মসূচিতে অংশ নিতেন এবং আওয়ামী নেতাদের ছবি পোস্টারে ব্যবহার করতেন। জুলাই আন্দোলনের পর সুবিধাবাদী ভূমিকা নিয়ে তিনি রাজনৈতিক অবস্থান বদলেছেন।
কাশিমপুর জমিদারবাড়ি দখলের অভিযোগ প্রসঙ্গে শওকত হোসেন সরকার বলেন, ‘২০০৫ সালে আমি ওই বাড়ির অর্ধেক বৈধভাবে ক্রয় করি। পরবর্তীতে ২০১২ সালে তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর অনুসারীরা হামলা চালালে আমি হাইকোর্টে রিট করি। আদালত ২০২৩ সালে রাষ্ট্রপক্ষকে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং নতুন রেকর্ডে (বি.এস. পর্চা) আমার নামে মালিকানা স্বীকৃতি দেয়।’
তিনি আরও জানান, ‘আমার বিরুদ্ধে ৪২টি মিথ্যা মামলা হয়েছিল। কাশিমপুর, টঙ্গী, সদর ও আশুলিয়া থানা এলাকায় কারাবাস ও হয়রানির শিকার হয়েছি। কিন্তু জাতীয়তাবাদী আদর্শ থেকে কখনো সরে যাইনি। প্রতিপক্ষরা যখন রাজনৈতিকভাবে টিকতে পারে না, তখন কুৎসা রটিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করে। কিন্তু গাজীপুরবাসী জানে—আমি জনগণের রাজনীতি করি ‘
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি ইতিমধ্যে আদালতে মামলা করেছি, প্রয়োজনে আরও করব। আমি চাই—যিনি এই অপপ্রচার চালিয়েছেন তিনি আদালতে এসে নিজের বক্তব্য প্রমাণ করুন। আমি বিশ্বাস করি, সত্য একদিন প্রকাশ হবেই, ইনশাআল্লাহ।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, বশির আহাম্মেদ বাচ্চু, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ূন কবির রাজু, জয়নাল আবেদীন তালুকদার, সাবেক দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রহিম কালা, কোনাবাড়ি থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, সদর মেট্রো থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. মোস্তফা নীনা প্রমুখ।