রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট-এ ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের নবনির্বাচিত প্রতিনিধিরা শপথ নিয়েছেন। রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে এ শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
রাকসুর রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. সেতাউর রহমানের সঞ্চালনায় ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে রাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব কেন্দ্রীয় সংসদ এবং সিনেট ছাত্রপ্রতিনিধি পদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথবাক্য পাঠ করান। এরপর ১৭টি হলের প্রভোস্টরা নিজ নিজ হল সংসদের নির্বাচিতদের শপথ পাঠ করান। নির্বাচনের প্রতিনিধিরা আগামী এক বছরের জন্য রাকসু, সিনেট ছাত্রপ্রতিনিধি ও হল সংসদের দায়িত্ব পালন করবেন।
এসময় রাকসুর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সালমান সাব্বির বলেন, ‘কিছু ইশতেহারকে সামনে রেখে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলাম। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে যে বিষয়গুলো নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা দরকার তা নিয়ে আমরা শিগগিরই কাজ শুরু করব। কিছু বিষয় আছে যা এক বছরে সম্ভব সেগুলো আমরা করার চেষ্টা করব, আর যেগুলো এক বছরে বাস্তবায়ন সম্ভব না সেগুলো অন্ততপক্ষে শুরু করে রাখব।’
রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাউদ্দীন আম্মার বলেন, ‘আজকে অফিসিয়ালি দায়িত্ব পেয়ে ভালো লাগছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। শিক্ষার্থীরা যেহেতু আমাকে তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে, আমাকে ঋণী করেছে— এখন আমার একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করা। যারা বিজিত হয়েছে তাদেরও শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করার অনেক ইশতেহার ছিল, আমরা তাদেরগুলো নিয়েও আমরা কাজ করতে চাই। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে রাকসু হয়নি, রাকসু ফান্ডের টাকাগুলো কোথায়, কীভাবে খরচ হয়েছে তা প্রথম অধিবেশনেই প্রশাসনের কাছ থেকে জানব। এর পর শিক্ষার্থীদের জন্য এক বছর কাজ করে কোথায়, কীভাবে কত টাকা খরচ করেছি তার হিসাব দিয়ে আমরা বিদায় নিব ইনশাআল্লাহ।’
এসময় রাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, দীর্ঘ ৩৫ বছরের অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে আজ আমরা শপথ গ্রহণ করলাম। এর মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ইতিহাস সৃষ্টি হলো, তা বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমাদের সবার ইশতেহারগুলো একত্র করে আমরা সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে শেয়ার করব এবং এসব ইশতেহার বাস্তবায়নে কত বাজেট প্রয়োজন এবং কোনটি কখন বাস্তবায়ন করা হবে—সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করব।’
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন মজুমদারসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা।
উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত রাকসু নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হন ছাত্রশিবির সমর্থিত মোস্তাকুর রহমান জাহিদ, জিএস সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দীন আম্মার এবং এজিএস ছাত্রশিবির সমর্থিত এস এম সালমান সাব্বির। মোট ২৩টি পদের মধ্যে ২০টিতেই ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা জয়ী হন।