ঢাকা: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা এখন থেকে তাদের অভিভাবকদের পছন্দের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে যাবে। আগে পুরো অর্থ যেত শুধু নগদের হিসাবে। নগদের সঙ্গে আগের একক চুক্তিটি বাতিল করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।
সেইসঙ্গে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায় ও এমক্যাশের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন থেকে উপবৃত্তি বিতরণে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের চিঠিতে বলা হয়, ডাক অধিদফতর ও ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ লিমিটেডের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সম্পাদিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি বাতিল করা হলো। অর্থ বিভাগের নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকা ও নগদ লিমিটেড চুক্তিপত্রের সব শর্ত যথাযথভাবে পালন করতে না পারার কারণে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে উপবৃত্তির টাকা বিতরণে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে গত ১২ অক্টোবর মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেখানে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর এবং ১৩টি এমএফএস প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ২৬ অক্টোবর থেকে দেশের সব মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি বিতরণের নির্দেশনা দেয়। ফলে এখন থেকে উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা তাদের পছন্দের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে অর্থ নিতে পারবেন।
চিঠিতে উপবৃত্তি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দ্বারা মোবাইল সিম ও এমএফএস হিসাব নিবন্ধন নিশ্চিত করতে বলা হয়। নতুন এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জানানোর জন্য সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ওই চিঠিতে।
উল্লেখ্য, দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো থেকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ ও শিক্ষার প্রতি তাদের আগ্রহ ধরে রাখতে উপবৃত্তি দেয় সরকার। বিগত সরকারের সময়ে চালু হওয়া এই বৃত্তি নগদ লিমিটেডের হিসাবের মাধ্যমে দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শনে উঠে আসে, এতে বড়ধরনের অনিয়ম হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পতনের পর নগদ লিমিটেডের উদ্যোক্তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে যান। এর পর নগদের দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি সরকারি অর্থ বিতরণে স্বচ্ছতা আনতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়।