যুক্তরাজ্যের পূর্বলন্ডনের হোয়াইটচ্যাপলে লন্ডন বারা অব টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের টাউনহলের সামনে ও আশপাশের এরিয়া জুড়ে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ ও শান্তি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে ভিন্ন-ভিন্ন স্লোগানে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে শান্তিকামী হাজারো মানুষের সমাগম হয়। সবার একটাই কথা বর্ণবাদ নিপাত যাক, সমাজে শান্তি ফিরে আসুক। বিভেদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্য। ডানপন্থীদের মিছিল ঠেকিয়েছি, এই অর্জন শান্তিকামী মানুষের।
শান্তি সমাবেশে আসা ইউনাইটেড প্লাটফৰ্ম এগেইনস্ট রেসিজম অ্যান্ড ফ্যাসিজম এর নূরুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘টাওয়ার হ্যামলেটসে বর্ণবাদের কোনো স্থান নেই। নেই কোনো বিভাজনের সুযোগ। ডানপন্থীদের উগ্র কর্মসূচি ঠেকাবো যেভাবে আমরা ৭৮রে তাদের বিরূদ্বে রুখে দাঁড়িয়েছিলাম। বর্ণবাদ, সহিংসতা এবং বিভেদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্য প্রদর্শনের জন্য আজ আমরা এই শান্তিপূর্ণ সমাবেশে একত্রিত হয়েছি। ঐক্যই আমাদের শক্তি।’
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে অপরাহ্ন পর্যন্ত বর্ণবাদের বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভ ও শান্তি মিছিলে এসে সমবেত হন— জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে বহুজাতিক সচেতন ব্রিটিশ নাগরিকরা, ব্রিটিশ বাঙালি এমপি, রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, সমাজকর্মী, সংস্কৃতিকর্মী, ছাত্র-শিক্ষক, শিশু, নারীসহ সাধারণ নাগরিকরা। এটি ঐক্য, সম্প্রীতি ও বৈচিত্র্যের প্রতীক হিসেবে হোয়াইটচ্যাপেলে এই শান্তি সমাবেশের আয়োজন ছিল।
একটি বিবৃতিতে মেট পুলিশ জানিয়েছে, জননিরাপত্তার স্বার্থে এবং বিশৃঙ্খলা রোধে চরম ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ইউকিপ ইভেন্টটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পূর্ব থেকেই এখানে ইউকিপ এর সমাবেশ ঘোষণা করেছিল। তারা প্রায়শই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের আয়োজন করে থাকে। যখন তাদের আগমন হয় তখন জনমনে আতঙ্ক দেখা দেয়, চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় এবং বিভিন্ন অঘটন দেখা দেয়।
এবার এগুলো এড়াতে পুলিশ সেটি আগে থেকে বন্ধ করে দিয়েছিল। যার কারণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
স্ট্যান্ড আপ টু রেসিজম দ্বারা আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘আমাদের দেখাতে হবে যে ডানপন্থীরা কখনোই স্বাগত নয়। ফ্যাসিবাদীদের আত্মবিশ্বাস ভেঙে তাদের গতি রোধ করতে ব্যাপক গণবিরোধী আন্দোলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যাতে তারা পূর্ব লন্ডনে প্রবেশ না করতে পারে।’
‘ইউকিপ এর নেতা নিক টেনকোনি একজন ফ্যাসিবাদী, পোর্টসমাউথে তাকে নাৎসি স্যালুট দিতে দেখা গেছে। তাকে প্রতিহত করতেই হবে।’
১৯৩৬ সালের কেবল স্ট্রিটের আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭০-এর দশকে ন্যাশনাল ফ্রন্টের বিরুদ্ধে ব্রিক লেনের বাঙালিদের বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন এবং ২০১০-এর দশকে ইডিএল এর বিরোধিতা পর্যন্ত—প্রতিবারই টাওয়ার হ্যামলেটস থেকে ফ্যাসিবাদীদের প্রতিরোধের মাধ্যমে রুখে দেওয়া হয়।