লাদাখ সীমান্ত সংঘাতের জেরে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর অবশেষে সরাসরি বিমান যোগাযোগ ফের চালু করল ভারত ও চীন।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ১৮০ জন যাত্রী নিয়ে চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গুয়াংঝৌতে অবতরণ করেছে।
দীর্ঘদিন ধরে হিমালয় পার্বত্য এলাকায় অবস্থিত ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখ নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে বিরোধ চলছে। চীন লাদাখকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করলেও ভারত তা বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
২০২০ সালের জুন মাসে লাদাখের গালাওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনা সেনাদের মধ্যে মারাত্মক সংঘাত ঘটে। সীমান্ত চুক্তির কারণে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকায় উভয়পক্ষের সেনারা লাঠি, পাথর, ছুরি এবং পেরেকযুক্ত লাঠি নিয়ে একে অপরের ওপর আক্রমণ করে। সেই সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা এবং বেশ কয়েকজন চীনা সেনা নিহত হন।
ওই সংঘাতের ফলস্বরূপ নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের কূটনৈতিক সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। ভারত চীনের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট যোগাযোগ স্থগিত করে এবং চীনা পর্যটকদের ভিসা প্রদানও বন্ধ করে দেয়।
তবে পরবর্তী বছরগুলোতে দুই দেশের সম্পর্কের ধীরে ধীরে উন্নতি হতে শুরু করে। এই উন্নতির পথ ধরেই সীমান্ত অঞ্চলে প্রহরা সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে পৌঁছায় নয়াদিল্লি-বেইজিং। এই চুক্তিটিকে দুই দেশের সম্পর্কের ইতিহাসে ‘মাইলফলক’ হিসেবে দেখছেন ভারত ও চীনের অধিকাংশ কূটনীতিক।
এই চুক্তির পর গত জুলাই মাসে চীনা পর্যটকদের জন্য ফের ভিসা দেওয়া শুরু করে নয়াদিল্লি। এরপর সাংহাই কো অপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলন উপলক্ষ্যে গত আগস্টে সাত বছরের বিরতি ভেঙে প্রথমবারের মতো চীন সফরে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার বৈঠক হয়।
এর আগে আগস্টের শুরুতে নয়াদিল্লি সফরে এসেছিলেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। সেখানে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রাহ্মনিয়াম জয়শঙ্করের সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা হ্রাস করার বিষয়ে সফল বৈঠক করেন তিনি।
উল্লেখ্য, চলতি অক্টোবরের শুরুতে এক সরকারি বিবৃতিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার চীনের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট সংযোগ ফের চালু করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।