Tuesday 28 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রংপুরের ৩৩ আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে তারেক রহমানের রুদ্ধদ্বার বৈঠক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৮ অক্টোবর ২০২৫ ১২:২৪ | আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:০১

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

রংপুর: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রোববার (২৬ অক্টোবর) রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। এতে অন্তত ১২টি আসনে ১২ জনকে মনোনয়নের ‘সবুজ সংকেত’ দেওয়া হয়েছে, যাদের সঙ্গে তারেক রহমান ফোনে কথা বলে কাজের নির্দেশ দিয়েছেন। বৈঠকে হাইপ্রোফাইল জামায়াত ও এনসিপি নেতাদের আসনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া দুই নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে গণসংযোগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সভায় শতাধিক প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু কোনও প্রার্থী কথা বলার সুযোগ পাননি; পরিবর্তে ‘দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার পক্ষে কাজ করতে হবে’—এই বার্তাও দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের বিভাগীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। রংপুর বিভাগের প্রতিটি আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দলীয় নির্দেশে ঢাকায় উপস্থিত হয়েছিলেন।

সূত্র জানায়, রংপুর-২ আসনে সবচেয়ে বেশি ৪ জন প্রার্থী ছিলেন, যেখানে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের সম্ভাব্য মনোনয়ন নিয়ে বিশেষ আলোচনা হয়েছে। আজহারুল মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পেয়েও খালাস পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বিএনপির প্রার্থীকে জয়ী করার কৌশল নিয়ে খোঁজখবর চলছে। একইভাবে, পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলা নিয়ে পঞ্চগড়-১ আসন আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) এবং কাউনিয়া-পীরগাছা নিয়ে রংপুর-৪ আসনের এনসিপি প্রার্থী সদস্য সচিব আখতার হোসেনের আসনে মনোনয়ন নিয়ে তদন্ত চলছে।

বৈঠকে দুই নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। রংপুর-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী মোকাররম হোসেন সুজন এবং রংপুর-২ আসনের মনোনয়ন মোহাম্মদ আলী সরকারকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় বহিষ্কৃত করা হয়েছিল; তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে গণসংযোগ, বিশেষ করে নারী কর্মীদের মাঠকর্মে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত ৪ অক্টোবর তারেক রহমান সরাসরি ফোনে মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে কথা বলে এ নির্দেশ দেন বলে তার ঘনিষ্ঠরা নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে মোহাম্মদ আলী বলেন, “দিনরাত গণসংযোগ চালাচ্ছি।”

দলীয় সূত্র জানায়, তারেক প্রতিটি আসনে ৩-৪ বার যাচাই-বাছাই করছেন। নিজস্ব লোক পাঠিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। বিবেচনায় রয়েছে নিবেদন, জুলুম-নির্যাতন, ৫ আগস্টের পরের কর্মকাণ্ড, সাধারণ মানুষের ভাবনা (বিশেষ করে তৃণমূল নেতাকর্মী), ব্যক্তিগত ইমেজসহ বিভিন্ন বিষয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট এবং অমনোনীত প্রার্থীদের আমলও দেখা হচ্ছে। রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনের একমাত্র প্রার্থী জেলা বিএনপি আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, “তারেক রহমান বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে নির্দেশ দিয়েছেন।”

রংপুর বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক বলেন, “তারেক রহমান বিভিন্ন সোর্স কাজে লাগিয়ে যাচাই করছেন। ২০১৮-এর ভোট এবং অমনোনীত প্রার্থীদের আমলও দেখা হচ্ছে।”

রংপুর সদর-৩ আসনের প্রার্থী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন বলেন, “এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। তারেক রহমান যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেবেন। ১৮-৩৫ বছরের তরুণরা বড় ভূমিকা রাখবে, যারা আগে ভোট দিতে পারেনি।”

জেলা বিএনপি আহ্বায়ক শামসুজ্জামান শামু বলেন, “তারেক রহমান সবকিছু বিচার করে মনোনয়ন দেবেন।”

মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম মিজু বলেন, “ক্লিন ইমেজকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।”