চট্টগ্রাম ব্যুরো: সংকট নিরসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ব্যর্থতার কারণে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টন হত্যাযজ্ঞ হয়েছিল এবং এর সুযোগ নিয়ে ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিনরা এক-এগারো ঘটিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদে দক্ষিণ জেলা জামায়াতের উদ্যোগে ‘২৮ অক্টোবরের পল্টন ট্র্যাজেডি দিবস’ স্মরণে এক সমাবেশে তিনি একথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ছিল চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদ পূর্তির দিন। সংবিধান অনুযায়ী একটি নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার গঠনের মাধ্যমে সেই সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অতি তুচ্ছ অজুহাতে আওয়ামী লীগ সাংবিধানিক সেই সরকারকে মেনে নিতে রাজী হয়নি। বরং কথিত আন্দোলনের নামে সারাদেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিলো।’
‘এতে সৃষ্ট সংকট নিরসনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মহাসচিবরা দফায় দফায় বৈঠক করেন, কিন্তু কোনো সমাধানে উপনীত হতে পারেননি। সেসময় এটা ছিল দেশের বৃহত্তম দুই দলের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। এর ফলে ২৮ অক্টোবর নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পল্টন হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতাসহ দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের পথ উন্মুক্ত হয়েছিল। এটি নিছক কোনো হত্যাকাণ্ড ছিল না। সেদিন খুনিরা লাশের ওপর নৃত্য করে দানবীয় উল্লাসে মেতে উঠেছিল।’
সেইসময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘তারপরও রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দীনের নেতৃত্বে একটি কেয়ারটেকার সরকার গঠিত হয়। কিন্তু আওয়ামী নৈরাজ্য থেমে থাকেনি। একসময় সেই সরকারের উপদেষ্টারা পদত্যাগে বাধ্য হন। আর সে সুযোগে ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দীনরা এক-এগারোর অভ্যুত্থান ঘটাতে সক্ষম হয়। সেই কথিত কথিত জরুরি সরকারের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি ছিলো না। ওই সরকারের কাজই ছিলো আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন।’

পল্টন হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করে শাহজাহান বলেন, ‘প্রকাশ্য দিনেদুপুরে হত্যাযজ্ঞে অংশ নেওয়া খুনিদের আইনের আওতায় আনা হয়নি। তাদের শাস্তি নিশ্চিত না করে উল্টো মামলা খারিজ করে দিয়েছিল ফ্যাসিস্ট সরকার। আমরা খুনিদের বিচার চাই।’
সমাবেশে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের সাবেক আমীর শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘২০০৬ সালে পল্টনের শহিদরা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তারা বাতিলের সম্মুখে জীবন দিতে শিখিয়েছে। তাই আমাদের জন্য হতাশার কিছু নেই। বরং শহীদি তামান্না নিয়েই আগামীদিনে নিজের করণীয় নির্ধারণ করতে হবে। সবাইকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’
সমাবেশে দক্ষিণ জেলার আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, লোহাগাড়া উপজেলা আমীর আসাদুল্লাহ ইসলামাবাদী, সাতকানিয়া উপজেলা আমীর কামাল উদ্দিন, সাতকানিয়া পৌরসভা আমীর হামিদ উদ্দিন আজাদ, উপজেলা নায়েবে আমীর হাফিজুল হক নিজামী, অধ্যাপক আবু তাহের, সাতকানিয়া উপজেলা সেক্রেটারি তারেক হোসাইন, লোহাগাড়া উপজেলা সেক্রেটারি আ ন ম নোমান বক্তব্য রাখেন।