ফরিদপুর: দীর্ঘ ২০ বছর আগে ফরিদপুরে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের দুইজনকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ৪ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে তাদেরকে আরো ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয় আদালত।
এ ঘটনার প্রায় ২০ বছর পর মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ আদেশ দেন ফরিদপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. শফিউদ্দীন। রায় ঘোষণার পাশাপাশি পলাতক সাজাপ্রাপ্ত ওই চার আসামি আদালতে উপস্থিত না থাকায় পরে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি হলেন- ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের শিরগ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন (৫৩), বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের গুনবহা গ্রামের কামরুল হাসান ওরফে কামরুজ্জামান (৪৫), ধোপাপাড়া গ্রামের মনিরুজ্জামান ওরফে মনির (৪০) ও চর ধোপাপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ (৬০)।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, নিহত দুই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের তপন রায় (৩০) ও নিকলাল মাঝি (৩৫) বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের চর ধোপাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বিপুল কুমার বাকচীর বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিল। ২০০৫ সালের ২৮ জুলাই দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ওই দুইজনের বাড়িতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তদের কুপিয়ে জখম করে।
পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে।
এ ঘটনায় ওই বাড়ির মালিক বিপুল কুমার বাকচী বাদী হয়ে ২০০৫ সালের ২৮ জুলাই অজ্ঞাতদের আসামি করে বোয়ালমারী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুলতান মাহমুদ ২০০৭ সালের ২৮ মার্চ ওই চার জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুরের বিশেষ জজ আদালতের সরকার পক্ষের পিপি মো. আজিজুর রহমান বলেন, আসামীদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঘাতকরা টাকার লোভে ওই দুইজনের ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটায়। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেফতার করা হলেও তারা জামিনে গিয়ে পলাতক হন। বহু দেরিতে হলেও জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সস্তুষ্ট।