Tuesday 28 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গাজায় ‘শক্তিশালী ও তাৎক্ষণিক’ হামলার নির্দেশ নেতানিয়াহুর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৯ অক্টোবর ২০২৫ ০০:২১ | আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ০১:৪৯

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় ‘শক্তিশালী ও তাৎক্ষণিক’ বিমান ও স্থল হামলার নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে এসব হামলা কখন এবং কোথায় চালানো হবে, তা এখনও স্পষ্ট করেনি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

সরকারি সূত্র জানায়, হামাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের দাবি—গাজায় এখনো থাকা ১৩ ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ হামাস হস্তান্তর করেনি, যা চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন।

অন্যদিকে হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও ইসরায়েল অন্তত ১২৫টি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে, যেখানে ৯৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের উদ্ধৃতি দিয়ে হামাস বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা বন্দিদের মরদেহ উদ্ধার করতে বিশেষজ্ঞ দল ও ভারী যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। ইসরায়েল সীমিত পরিসরে এমন সহায়তা দিলেও এখনো সব মরদেহ উদ্ধার সম্ভব হয়নি।

মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো—যাদের মধ্যে ইসরায়েলি ও মার্কিন কর্মকর্তারা, এমনকি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও রয়েছেন—আগেই সতর্ক করেছিলেন যে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা বন্দিদের দেহ উদ্ধার করা অত্যন্ত কঠিন হবে।

গাজায় হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য সুহাইল আল-হিন্দি বলেছেন,  ইসরায়েলি বন্দীদের মরদেহ উদ্ধারের সময় এই দলটি “গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার” সম্মুখীন হচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়ায় সহায়তা করার জন্য ভারী সরঞ্জাম প্রয়োজন।

তিনি বলেন,  “ইসরায়েলকে বুঝতে হবে যে আমরা চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তাদের অবশ্যই আমাদের বিরুদ্ধে এটি লঙ্ঘনের মিথ্যা অভিযোগ বন্ধ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, হামাস মরদেহগুলো শনাক্ত করার জন্য “রেড জোনে” অনুসন্ধান দল প্রবেশের জন্য অনুরোধ করেছিল।  যা ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করেছে।

তিনি জানান, কোনো বন্দীর মরদেহ গোপন করা বা সরবরাহে বিলম্বিত করার কোনও আগ্রহ আমাদের নেই এবং আমরা চুক্তির প্রতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করছি। আমরা মরদেহগুলো উদ্ধারের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি এবং অবশিষ্ট মরদেহগুলো উদ্ধারে যে কোনও বিলম্বের জন্য দখলদার ইসরায়েল সম্পূর্ণ দায়বদ্ধ। তিনি মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে এবিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী হামাস বন্দিদের মরদেহ ফেরত দেবে, আর বিনিময়ে ইসরায়েল সামরিক অভিযান আংশিক স্থগিত রাখবে—এমন প্রতিশ্রুতি ছিল উভয় পক্ষের। তবে মরদেহ উদ্ধার বিলম্বিত হওয়ায় পরিস্থিতি ফের উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, বন্দিদের মরদেহ উদ্ধারে ব্যর্থতা ইসরায়েলের সামরিক প্রতিক্রিয়ার অজুহাতে পরিণত হয়েছে, যা যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎকে আরও অনিশ্চিত করছে।

পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করেছেন, নেতানিয়াহুর নতুন হামলার নির্দেশে গাজার মানবিক পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটবে। এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও গাজাজুড়ে বিস্ফোরণ ও ড্রোন হামলার শব্দ এখনও শোনা যাচ্ছে।

আল জাজিরা জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর “শক্তিশালী” আক্রমণের হুমকি দেওয়ার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা সিটিতে ধারাবাহিক বিমান হামলা চালিয়েছে। রাফা শহর এবং খান ইউনিস শহর থেকেও গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের গাজা অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৮ হাজার ৫২৭ জন নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৯৫ জন আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস-নেতৃত্বাধীন আক্রমণে ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর