চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম পরিবারের দুই সদস্যের নামে বরাদ্দ দেওয়া জমি অপব্যবহারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) দায়িত্বে অবহেলা করেছে বলে প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এজন্য দায়ী সিডিএর কর্মকর্তাদের শনাক্ত করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের কর্মকর্তারা।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে সিডিএ কার্যালয়ে অভিযানে গিয়ে এ সংক্রান্ত নথিপত্র যাচাই-বাছাই করেছে দুদকের একটি টিম। দুদকের চট্টগ্রামের উপ-সহকারী পরিচালক হামেদ রেজা এতে নেতৃত্ব দেন।
দুদক সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের ২৪ আগস্ট নগরীর আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকায় মেসার্স মডার্ন প্রপার্টিজ লিমিটেড ও মেসার্স হাসান আবাসন প্রাইভেট লিমিটে নামে দুটি প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে ১০১ দশমিক ৮৭ কাঠা জমি বরাদ্দ দিয়েছিল দুদক। বরাদ্দের পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল ইজারার শর্তে।
উল্লেখ্য, বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ হাসান এবং চেয়ারম্যান আহসানুল আলম। হাসান এস আলম গ্রুপের কর্ণধার ব্যবসায়ী সাইফুল আলম মাসুদের ভাই ও আহসানুল আলম ছেলে।
বরাদ্দের পর প্রায় ২৫ বছর পার হতে চললেও এখনো সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ হয়নি। অথচ ২০২০ সালে ওই জমি বন্ধ রেখে ঋণ গ্রহণের জন্য সিডিএ থেকে অনাপত্তিপত্র নেওয়া হয়। পরে এস আলম ট্রেডিংয়ের নামে জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হয়।
দুদকের চট্টগ্রাম জেলার উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ জানান, সম্প্রতি সিডিএর বরাদ্দ দেওয়া ওই জায়গা পরিদর্শনে গিয়ে দুদকের টিম সেখানে চৌধুরী সুপার শপ ও রয়েল অটোকার নামে দুটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম দেখতে পায়। অথচ সিডিএর নথিপত্রে এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো অস্তিত্ব উল্লেখ করা হয়নি। জমি যাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তারা শর্ত লঙ্ঘন করে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে সেটি ভাড়া দিয়েছে। কিন্তু সিডিএ বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
অভিযান শেষে দুদকের উপ সহকারী পরিচালক হামেদ রেজা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বরাদ্দের শর্ত লঙ্ঘন করলেও ইজারাদারের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি সিডিএ। এতে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব অবহেলা রয়েছে। আবার ইজারা পাওয়া প্রতিষ্ঠান হাসান আবাসন প্রাইভেট লিমিটেড সেখানে ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছে। এখানে সিডিএ’র কোন কর্মকর্তার দায় রয়েছে কিনা তা নিরূপণ করে দুদক কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’