ঢাকা: পুঁজিবাজারের এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত হওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ও পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ‘ব্রেইন স্টেশন ২৩ পিএলসি’। কোম্পানিটি ৫ কোটি টাকা পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এরই ধরাবাহিকতায় কোম্পানিটি কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফার (কিউআইও)-এর জন্য আবেদন করেছে। কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) সাবসিডিয়ারি মার্চেন্ট ব্যাংক।
গত ২৮ অক্টোবর ব্রেইন স্টেশন ২৩ পিএলসি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে কিউআইও আবেদন করেছে। একইসঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) কাছে কিউআইও’র আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে কোম্পানিটির কিউআইও আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রস্তাবিত কিউআইও’র আওতায় কোম্পানিটি ৫ কোটি টাকা উত্তোলনের পরিকল্পনা করেছে। এই অর্থ মূলত উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মূলধন ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য এবং কিউআইও’র কাজে ব্যয় করা হবে।
কোম্পানিটি আশা করছে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে দেশের আর্থিক ও প্রযুক্তি খাতের মধ্যে এক নতুন সেতুবন্ধন তৈরি হবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে প্রযুক্তিনির্ভর কোম্পানির অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও সুদৃঢ় হবে।
কোম্পানিটি ডিজিটাল রূপান্তর, সফটওয়্যার অ্যাঙ্গেলিংয়ের ক্ষেত্রে তার শক্তিশালী দক্ষতার জন্য স্বীকৃত। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত, কোম্পানিটি ইউরোপ, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে বিশ্বব্যাপী বিশ্বস্ত একটি প্রযুক্তিগত অংশীদার হিসেবে বিকশিত হয়েছে। ব্রেইন স্টেশন ২৩টি গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা প্রদান করে, যার মধ্যে রয়েছে সক্ষম পরিষেবা (টিইএসএস) যেমন- সফ্টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, গমের প্রয়োগ এবং সম্পর্কিত পরিষেবা, ওয়েল আইটি সহায়তা এবং সফ্টওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণ, উদ্ভাবন, ক্লায়েন্ট সন্তুষ্টি।
বর্তমানে কোম্পানিটি উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের ক্লায়েন্টদের সেবা প্রদান করে একটি বৈশ্বিকভাবে বিশ্বস্ত প্রযুক্তি অংশীদার হিসেবে গড়ে উঠেছে।
ব্রেইন স্টেশন ২৩ আইটি-সক্ষম সেবা (আইটিইএস)-এর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ, যেমন সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপ্লিকেশন কাস্টমাইজেশন, ওয়েব হোস্টিং ও সংশ্লিষ্ট সেবা, পাশাপাশি আইটি সাপোর্ট ও সফটওয়্যার মেইনটেন্যান্স।
এর আগেও কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করেছিলো। বিএসইসির সম্মতি পাওয়ার পরেও কোম্পানিটি এসএমই-তে তালিকাভুক্ত হয়নি।
এ বিষয়ে ব্রেইন স্টেশন ২৩ পিএলসির পরিচালক ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মো. মবাসশির আলম বলেন, ‘‘প্রস্তাবিত পাবলিক ইকুইটি ফাইন্যান্সিং কোম্পানির আর্থিক বিশ্বাসযোগ্যতা ও স্বচ্ছতাকে আরও জোরদার করবে, যার মাধ্যমে দেশীয় ও বৈশ্বিক ক্লায়েন্ট এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানির আর্থিক উপস্থিতি ও আস্থা বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে, বিদ্যমান এমপ্লয়ি শেয়ার ওনারশিপ প্ল্যান কাঠামোর মাধ্যমে কর্মীদের প্রেরণা ও ধরে রাখার সক্ষমতাও বাড়বে।”
পরিচিতি ও আর্থিক অবস্থা
ব্রেইন স্টেশন ২৩ পিএলসি ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। আর ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারি কোম্পানিটিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত করা হয়। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৪২ কোটি ৭৫ লাখ ৭৭ হাজার ৯০ টাকা। কোম্পানিটি কিউআই’র মাধ্যমে ১০ টাকা মূল্যের ৫০ লাখ শেয়ার ছেড়ে ৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফার বাই স্মল ক্যাপিটাল কোম্পানি) রুলস, ২০২২ অনুসারে মূলধন সংগ্রহের জন্য কোম্পানিটি কিউআইও আবেদন করেছে।
সর্বশেষ ২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৩.৭৭ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ৫.১৫ টাকা। এর আগে ২০২৩ সালের ৩০ জুন শেয়ার প্রতি মুনাফা ছিল ৯.৬৩ টাকা। এছাড়া ২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৫.৫৮ টাকা।