সিলেট: সিলেটের উন্নয়ন বৈষম্য ও বঞ্চনার প্রতিবাদে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে নগরীতে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
রোববার (২ নভেম্বর) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। দুপুর ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কর্মসূচি চলেছে।
সিলেটবাসীর দাবি আদায়ে গঠিত ‘সিলেট আন্দোলন’-এর ব্যানারে পালন করা হচ্ছে এ কর্মসূচি। নবগঠিত এ সংগঠনটির নেতৃত্বে রয়েছেন আরিফুল হক চৌধুরী।
অবস্থান কর্মসূচিতে আলেম-উলামা, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ যোগ দিয়েছেন। এতে সভাপতিত্ব করেন দরগাহে হজরত শাহজালাল (রহ.) জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফিজ মাওলানা আসজাদ আহমদ।
অবস্থান কর্মসূচি সফল করতে নবগঠিত এ সংগঠনের প্রধান আরিফুল হক চৌধুরী গত কয়েকদিন ধরে নগরীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গণসংযোগ করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে আরিফুল হক চৌধুরীর কুমারপাড়ার বাসায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়ী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তি, শিক্ষক, সাংবাদিক, ধর্মীয় ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের পরামর্শক্রমে গঠন করা হয় ‘সিলেট আন্দোলন’। সভায় রবিবার অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে সূচনা বক্তব্যে সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘গত ১৫ বছরেও সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ শেষ হয়নি। অনলাইনে রেলের টিকিট মেলে না। বিমানভাড়া আকাশচুম্বী। এ অবস্থায় সিলেটের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। অবিলম্বে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এবং আমাদের ন্যায্য দাবিগুলো পূরণ না হলে আমরা রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে তা আদায় করে ছাড়বো।’
আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সিলেট সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। সিলেটের জন্য ২০২১ সালে সিলেটের উপজেলা ও ইউনিয়নসমূহের রাস্তা-ঘাট সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় সরকার সচিব ফের প্রকল্পটির ডিপিপি (ডেভেলপম্যান্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) তৈরি করার নির্দেশনা দিয়েছেন- বিষয়টি আমাদের জন্য হতাশার। বাদাঘাটে ওয়াটার ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্ট স্থাপনেরও তেমন অগ্রগতি নেই। এ অবস্থায় আগামী রমজানে সিলেটে পানির জন্য হাহাকার তৈরি হতে পারে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন। সামগ্রিক পরিস্থিতিতে সিলেটের মানুষের রাজপথে নামা ছাড়া সামনে কোন উপায় নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া ছাড়া আমরা রাজপথ ছাড়বো না।
সম্প্রতি আরিফুল হক চৌধুরী সিলেটের উন্নয়ন বৈষম্য দূর করতে আন্দোলন শুরু করেন। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে নিয়ে আরিফুল হক ‘সিলেট আন্দোলন’ ব্যানারে মাঠে নামেন। এর আগে সিলেটের বৈষম্য দূর করতে গত ১২ অক্টোবর নগরীতে সমাবেশ করে ১৫ দিনের আলটিমেটাম দেন। গতকাল শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগা গেট এলাকা থেকে মশাল মিছিল বের হয়। দাবি আদায়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় আবার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘যেভাবে ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে দাবি আদায় করা হয়েছে, তেমনি আমাদের দাবিও আদায় করা হবে। আমাদের আন্দোলনের প্রতি প্রবাসীসহ সিলেটের বিভিন্ন পেশার মানুষের সমর্থন রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’