গত শনিবার সিডনির লিভারপুলের হুইটল্যাম লেজার সেন্টারের রাতটি হয়ে উঠেছিল প্রবাসী বাঙালিদের জন্য এক ব্যতিক্রমী উৎসব। বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের দুই প্রজন্ম—মাইলস ও আর্টসেল প্রথমবারের মতো একই মঞ্চে গান করল।
‘গ্রিনফিল্ড এন্টারটেইনমেন্ট’ আয়োজিত এই ‘মিউজিক ফেস্ট’ ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আগ্রহ দেখা গেছে আগে থেকেই। আয়োজনের আগে ভিডিও বার্তায় মাইলস জানায় তাদের উচ্ছ্বাস। ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য হামিন আহমেদ বলেন, ‘সিডনি বরাবরই আমাদের কাছে বিশেষ কিছু। সম্ভবত ১৯৯৬ সালে আমরাই প্রথম বাংলাদেশি ব্যান্ড হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় পারফর্ম করি। এরপর এ নিয়ে অন্তত পঞ্চমবারের মতো সিডনিতে এলাম। এখানকার দর্শকদের ভালোবাসা সব সময়ই অবিশ্বাস্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম এটি স্মরণীয় একটি আয়োজন হতে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছি সবাই একসঙ্গে গাইবে, চিৎকার করবে—ভক্তরা সেটাই করেছেন।’ তুর্য যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি শহরে ট্যুর করছি, কিন্তু সিডনির আবহ একেবারেই আলাদা। দর্শকেরা আমাদের রাতটিকে স্মরণীয় করে দিয়েছেন।’
মাইলস যখন ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘নীলা’, ‘ধিকি ধিকি’ ও ‘ফিরিয়ে দাও’-এর মতো কালজয়ী গান পরিবেশন করে, তখন নস্টালজিয়ায় ভরে ওঠে পুরো হল। উল্লাসে প্রতিধ্বনিত হয় মিলনায়তন।
শুরুতে মঞ্চে আসে নব্বই-পরবর্তী প্রজন্মের ব্যান্ড আর্টসেল। ‘ধূসর সময়’, ‘দুঃখবিলাস’ও ‘পথ চলা’র মতো গান দিয়ে তারা তরুণ দর্শকদের মাতিয়ে রাখে। তাদের স্বকীয় রক সাউন্ড আর জটিল কম্পোজিশনে মুগ্ধ শ্রোতারা। ল্যাকেম্বার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইরফান খান বলেন, ‘মাইলস আমাদের কৈশোরের সঙ্গী। কিন্তু একই মঞ্চে আর্টসেলকেও পাওয়া ছিল এক নতুন অভিজ্ঞতা। এই রাত ভোলার নয়।’
আয়োজক ‘গ্রিনফিল্ড এন্টারটেইনমেন্টের’ মুখপাত্র ফয়সাল আজাদ বলেন, ‘দুই প্রজন্মের দুই শীর্ষ ব্যান্ডকে এক মঞ্চে আনার স্বপ্ন ছিল আমাদের। সিডনির বাঙালিরা দীর্ঘদিন এমন কিছুর অপেক্ষায় ছিল। এটি এখানকার কনসার্ট ইতিহাসে একটি মাইলফলক।’
রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলা এই ‘মিউজিক ফেস্ট’ শুধু একটি কনসার্ট ছিল না, বাংলাদেশি ব্যান্ড সংগীতের দুই ধারার এক মেলবন্ধনও বটে, বলেন আরেক আয়োজক এনামুল হক। অনুষ্ঠানে দলের প্রয়াত সদস্য শাফিন আহমেদকে স্মরণ করে একাধিক গান শোনায় মাইলস।