ঢাকা: বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক মুখ্যসচিব কামাল সিদ্দিকী (৮০) মারা গেছেন। সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোরে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে তিনি মারা যান। সকালে এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, আজ বাদ-আছর গুলশান আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে শায়িত করা হবে।
কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী একজন অর্থনীতিবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী। সেসঙ্গে বহু পুস্তকের রচয়িতা কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী। তিনি ১৯৪৫ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ফ্যাকাল্টি মেম্বার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭১ সালে তিনি নড়াইলের সাব-ডিভিশনাল অফিসার (এসডিও) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি ভারতে যান। ১২ এপ্রিল কলকাতায় পৌঁছান। ঘোজাডাঙ্গা-সাতক্ষীরা সীমান্তে একটি ক্যাম্পে থেকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। জুন মাসে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক কর্নেল ওসমানী ঘোজাডাঙ্গা মুক্তিযুদ্ধ ঘাঁটি পরিদর্শন করতে গিয়ে কামাল সিদ্দিকীকে কলকাতায় নিয়ে যান। সেখানে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উপসচিব হিসাবে নিযুক্ত হন।
বিজয়ের পরদিন ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং খুলনার জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুখ্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
কামাল সিদ্দিকী জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটির নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ কর্তৃক মনোনীত হন এবং ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ফ্লোরা অ্যান্ড ফাউনা অফ বাংলাদেশের প্রধান সম্পাদক ছিলেন।
২০০৬ সালে দেশের বাইরে চলে যান এই অর্থনীতিবিদ। অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয় সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন তিনি। তার স্থানীয় সরকার, অর্থনীতি, ভূমি ও নগরায়ণসহ নানান বিষয় নিয়ে কামাল সিদ্দিকীর একাধিক বই আছে। বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার, বাংলাদেশে স্থানীয় শাসন: প্রধান সমস্যা এবং প্রধান চ্যালেঞ্জ, দক্ষিণ এশিয়ায় ভূমি ব্যবস্থাপনা: একটি তুলনামূলক গবেষণা, বাংলাদেশে ভূমি সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।