Monday 03 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেবে ৮ ইসলামি দল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:০০ | আপডেট: ৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:৪৭

আট ইসলামি দলের শীর্ষ নেতাদের সংবাদ সম্মেলন।

ঢাকা: আটটি ইসলামি দলের পক্ষ থেকে আগামী ছয় নভেম্বর গণমিছিল করে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কার্যালয়ে আট দলের শীর্ষ নেতাদের সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘প্রাথমিক কর্মসূচি হিসেবে আগামী ছয় নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য গণমিছিল করবো। গণমিছিল নিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করবো। আশা করি একটি আলোচনার ভিত্তিতে সকল রাজনৈতিক দল মতপার্থক্যের বিষয়গুলো সমাধান করবো। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ছয় নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বিভিন্ন দল ভিন্ন ভিন্ন মিছিল করে রাজধানীর পল্টন মোড়ে এসে একত্রিত হবে। সেখান থেকে গণমিছিল নিয়ে গণভবনের দিকে স্মারকলিপি দিতে যাব।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তরিক। আশা করি রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ আলোচনার মাধ্যমে একমতের জায়গায় পৌছাবে। আমরা স্পেস রাখতে চাই। সেই স্পেস নিয়ে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। আগামী ১১ নভেম্বর মঙ্গলবার সমাবেশের কর্মসূচি আছে। যদি এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো সন্তোষজনক না হয় তাহলে ১১ নভেম্বর রাজধানীতে সমাবেশ করবো।’

দাবির বিষয়ে মামুনুল হক বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো পাঁচ দফার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত। সেখানে লেভেল প্লেইং ফিল্ড সংশোধিত আরপিও বহাল রাখা, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অবিলম্বে আদেশ জারি করা, আদেশ কার্যকর হলে উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি কার্যকর হবে।’

গণভোটের বিষয়ে মামুনুল হক বলেন, ‘এটা আমরা মনে করি নভেম্বরের মধ্যে হলে যুক্তিসঙ্গত। আয়োজনের সুবিধার্থে নির্বাচন কমিশন বা সরকার যদি এদিক সেদিক করে, সেটা আমাদের ফোকাস না। আমাদের ফোকাস জাতীয় নির্বাচনের আগে আলাদাভাবে গণভোট হতে হবে।’

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আমাদের যে দাবি তার মধ্যে একটি উচ্চকক্ষে পিআর আর একটি নিম্ন কক্ষে পিআর। আমাদের যে আটটি দল আছে তার মধ্যে একটি অংশ শুধু উচ্চকক্ষে পিআর চায়। আর আমরা জামায়াতে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি দল উভয় কক্ষে পিআর চাই। এখন যদি জুলাই সনদ গণভোটের মাধ্যমে আইনি ভিত্তি পায় তাহলে উচ্চকক্ষে পিআর বাস্তবায়ন হয়ে যাবে।’

বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. তাহের বলেন, ‘আমি গতকাল (২ নভেম্বর) আলোচনার আহ্বান করেছিলাম। আজকে উপদেষ্টা পরিষদ সকল দলের কাছে সেরকম একটি আহ্বান করেছে। আমরা দেখতে চাই মেইন স্টেকহোল্ডার যেসব দল আছে তারা এই আহ্বানে কিভাবে সাড়া দেন। তারাও যদি আমাদের মতো সাড়া দেন তাহলে বসতে কোনো আপত্তি নেই। আশা করি বসলেই একটা রাস্তা বেড়িয়ে আসবে। অপর দিকে উপদেষ্টা কমিটি যে আহবান জানিয়েছে সেটাকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু একটা বিষয় হলো-উপদেষ্টা পরিষদ যদি মনে করে তাদের আর কোনো দায়িত্ব নেই, দলগুলোই সব করবে তাহলে এখানে রেফারির অভাব হতে পারে। আমরা আশা করবো উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে বিশেষ করে চিফ অ্যাডভাইজার আগের মতো এখানে একটা রেফারির ভূমিকা পালন করবেন।’

তিনি বলেন, জুলাই সনদ যদি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে গণভোট পরে হলেও লাভ নাই, আগে হলেও লাভ নাই। সনদের জন্য গণভোট অপরিহার্য এটা আলাদা হলেই জনমত যাচাই করা যাবে। একসঙ্গে করার যে কূটকৌশল সেটা হলে ওইদিন হা-না ভোটের ব্যাপারে কারও মনোযোগ থাকবে না। কারও মনোযোগ থাকবে ধানের শীষ, কারও হাতপাখা, কারও দাড়িপাল্লা।

ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, আমাদের মূল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি পাওয়া। বিএনপিসহ সবাই আমরা একমত হয়েছি গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়া হবে। সেখানে সময়কাল নিয়ে দ্বিমত তৈরী হয়েছে। আমরা চাচ্ছি এটার গুরুত্ব আলাদা হওয়া উচিত। আগে যদি গণভোট হয়, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি হয় তারপর জাতীয় নির্বাচন হলে কোনো প্রশ্ন থাকে না। সেখানে বিএনপি বলেছে একই দিনে গণভোট ও নির্বাচন। এ বিষয়ে মামুনুল হক, আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, আসলে সেখানে ওটার গুরুত্ব থাকে না। হা-না ভোটের সংখ্যা যদি কম হয় তখন একটা প্রশ্ন উঠতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আবদুল কাইয়ুম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির মহাসচিব নিজামুল হক নাঈমসহ অন্যান্যরা।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর