পটুয়াখালী: সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি কুয়াকাটায় আগামীকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শতবর্ষীয় ঐতিহ্যবাহী রাস পূর্ণিমার উৎসব। উৎসব ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জার কাজ।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাসলীলা উপলক্ষে প্রতিবছর কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব উদযাপিত হয়। এখন এটি কুয়াকাটার সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আয়োজন হিসেবে পরিচিত। কুয়াকাটা শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমে আনুষ্ঠানিকভাবে রাস পূজার কার্যক্রম শুরু হবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়।
কারিগরদের রংতুলির নিপুণ ছোঁয়ায় সাজানো হচ্ছে ১৮ জোড়া প্রতিমা। পঞ্জিকা অনুযায়ী পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে মঙ্গলবার রাত ৯টা ২২ মিনিটে এবং শেষ হবে বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে। এই সময়ে হাজারো হিন্দু তীর্থযাত্রী পাপমোচন ও পূণ্যলাভের আশায় কুয়াকাটার সমুদ্রসৈকতে স্নান করবেন।
কুয়াকাটা রাসপূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নিহার রঞ্জন মণ্ডল জানান, এ বছরও পূর্ণিমা তিথিতে হাজারো ভক্ত ও দর্শনার্থীতে মুখরিত হবে সৈকত এলাকা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর রাতভর চলবে নামকীর্তন, ভাগবত পাঠ, আরতি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বুধবার (৫ নভেম্বর) সূর্যোদয়ের আগে সাগরে নামবেন তীর্থযাত্রীরা। অনেকেই ব্যক্তিগত মানত পূরণের উদ্দেশ্যে পৃথক পূজার আয়োজন করবেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, রাস উৎসব উপলক্ষে পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সর্বক্ষণিক ট্যুরিস্ট পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠে থাকবে।
কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক ও কলাপাড়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. ইয়াসীন সাদেক বলেন, পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দর্শনার্থী এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাউছার হামিদ বলেন, রাস উৎসব কুয়াকাটার ঐতিহ্যের অংশ। হাজারো মানুষের সমাগম হবে বলে ধারণা করছি। পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় জেলা, উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের সমন্বয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। সেনাবাহিনী, থানা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও গ্রাম পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকবেন।