ঢাকা: বিতর্কের মুখে অবশেষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘সংগীত শিক্ষক’ পদ বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে বাতিল করা হয়েছে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদটিও।
রোববার (২ নভেম্বর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানানো হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন।
এ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গত ২৮ আগস্ট জারি করা ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’-এ পরিবর্তন আনা হয়েছে। সেখানে নতুন করে সৃষ্টি করা এ দু’টি পদ বাতিল করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার আব্দুল্লাহ শিবলী সাদিক এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘যে দুটি বিষয় বিধিমালা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো বাদ। যেহেতু সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদ সংশোধিত বিধিমালায় নেই, তাই ধরে নিতে হবে সেগুলো বাদ।’
এদিকে নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ধারা ৫৯-এর উপধারা (১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪০(২) অনুচ্ছেদের বিধান মোতাবেক সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সঙ্গে পরামর্শক্রমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫-এ সংশোধন আনা হলো।
বিধিমালার যে অংশ সংশোধন করা হলো
সংশোধিত বিধিমালায় দুটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। একটি হলো- তফসিল-১ (বিধি-২-এর গ) ও আরেকটি বিধি ৭-এর উপবিধি (২)-এর দফা (খ)।
প্রথম প্রকাশিত বিধিমালায় তফসিল-১ এ ‘প্রধান শিক্ষক’, ‘সহকারী শিক্ষক’, ‘সহকারী শিক্ষক (সংগীত)’ ও ‘সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা)’ বিষয়ে নিয়োগের নিয়ম ও যোগ্যতার বর্ণনা ছিল। সংশোধিত বিধিমালায় তফসিল-১-এ শুধু ‘প্রধান শিক্ষক’ এবং ‘সহকারী শিক্ষক’ পদে নিয়োগের নিয়ম ও যোগ্যতা রাখা হয়েছে। ‘সহকারী শিক্ষক (সংগীত)’ ও ‘সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা)’ পদে নিয়োগের নিয়ম ও যোগ্যতার অংশটুকু বাদ দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, তফসিল-১-এ থাকা সহকারী শিক্ষক (সংগীত) ও সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) পদ দুটি এবারই নতুনভাবে চালু করা হয়েছিল। এ নিয়ে একটি পক্ষ বিরোধিতা করায় অন্তর্বর্তী সরকার পদ দু’টি বাতিল করেছে। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় এ নিয়ে স্পষ্ট করে কিছুই জানানো হচ্ছে না।
এদিকে, বিধি ৭-এর উপবিধি (২)-এর দফা (খ)-তে ‘অন্যান্য’ বিষয়ে শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ে অন্যূন’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হবে।
প্রথম প্রকাশিত বিধিমালায় বিধি ৭-এর উপবিধি (২)-এর দফা (খ)-তে বলা হয়েছিল, ‘এই বিধিমালার অধীন সরাসরি নিয়োগযোগ্য ৯৩ শতাংশ পদ মেধাভিত্তিক প্রার্থীদের দ্বারা, তন্মধ্যে ২০ শতাংশ পদ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের দ্বারা এবং ৮০ শতাংশ পদ অন্যান্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের দ্বারা মেধাক্রম অনুযায়ী নিয়োগযোগ্য হইবে।’
তবে সংশোধনের পর বিধিমালা বিধি ৭-এর উপবিধি (২)-এর দফা (খ)-তে হবে ‘এই বিধিমালার অধীন সরাসরি নিয়োগযোগ্য ৯৩ শতাংশ পদ মেধাভিত্তিক প্রার্থীদের দ্বারা, তন্মধ্যে ২০ শতাংশ পদ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের দ্বারা এবং ৮০ শতাংশ পদ ‘বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ে অন্যূন’ স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীগণের দ্বারা মেধাক্রম অনুযায়ী নিয়োগযোগ্য হইবে।’