Wednesday 05 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্ত্রীর পরকীয়ার বলি ব্যবসায়ী জহুরুল

স্পেশাল করেসপডেন্ট
৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৪২ | আপডেট: ৫ নভেম্বর ২০২৫ ২০:০০

গ্রেফতার নিহত জহুরুলের স্ত্রী শামীমা আক্তার ও বিপুল। ছবি: সারাবাংলা

বগুড়া: বগুড়ায় স্ত্রী এবং তার পরকীয়া প্রেমিকের হাতে খুন হয়েছেন বেকারি ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম (৪০)। এই ঘটনায় মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাতে নিহত জহুরুলের স্ত্রী শামীমা আক্তার (৩০) ও তার খালাতো ভাই (পরকীয়া প্রেমিক) বিপুলকে (৩৭) গ্রেফতার করেছেন সদর থানা পুলিশ।

নিহত জহুরুল বগুড়া সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়নের হাজরাদিঘী তালুকদারপাড়ার এলাকার বাসিন্দা। এর আগে ওইদিন সকালে জহুরুল ইসলামের মরদেহ ধানখেত থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন নিহত জহুরুলের স্ত্রী শামীমা আক্তার এবং তার পরকীয়া প্রেমিক খালাতো ভাই বিপুল। পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে জহুরুলকে হত্যা করা হয়। বুধবার (৫ নভেম্বর) বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর এসব তথ্য জানান। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে লোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, শৈশব থেকেই শামীমা আক্তার ও তার ফুফাতো ভাই বিপুলের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু জহুরুলের সঙ্গে বিয়ে হয় শামীমার। বিপুল এবং জহুরুল একে অপরের খালাতো ভাই। কিন্তু, বিয়ের পরেও শামীমা আর বিপুলের পরকীয়া সম্পর্ক চলছিল। এ নিয়ে দাম্পত্য জীবনে জহুরুলের সঙ্গে শামীমার বিরোধ তৈরি হয়। এই সম্পর্ককে বাঁচিয়ে রাখতেই শামীমা ও বিপুল স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী, গত সোমবার রাতে স্ত্রী শামীমা আক্তার দুধের সঙ্গে প্রায় ১৫টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তা স্বামী জহুরুলকে খাওয়ান। ওষুধ খেয়ে জহুরুল অচেতন হয়ে পড়লে শামীমা ফোন করেন প্রেমিক বিপুলকে। এরপর ঘুমন্ত জহুরুলকে বাসা থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির পাশের একটি অর্ধনির্মিত বাড়িতে। সেখানে দেয়ালের সঙ্গে সজোরে আঘাত করে তার মাথায় গুরুতর জখম করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভাঙা টয়লেটের টাইলস দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে মরদেহ ফেলে রাখা হয় পাশের ধানখেতে।

হত্যার পর শামীমা আক্তার নাটকীয়তার আশ্রয় নেন। মঙ্গলবার সকালে স্বামীর মরদেহ উদ্ধারের পর তিনি নিজেই সাংবাদিকদের কাছে স্বামীর হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার দাবি করেন। তবে এই হত্যার ঘটনায় শামীমা আক্তারের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করার পর পুলিশের নিবিড় তদন্তে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সত্য। পুলিশ নিশ্চিত হয়, নিহত জহুরুলের স্ত্রী শামীমাই এই হত্যার নেপথ্যে ছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর জানান, তদন্তের পর জানা যায়, পরকীয়ার জেরে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার সব তথ্য পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার হওয়া শামীমা আক্তার ও বিপুলকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সারাবাংলা/আরটি/জিজি
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর