চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্রাম থেকে অপহৃত ৫ জনকে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কুল্লা গ্রামের একটি নির্জন খামার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চ (ডিবি), সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল এবং পুলিশ সুপারের বিশেষ একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এসময় অপহরণে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জামাল আল নাসের জানান, জীবননগরের গোয়ালপাড়া (মাঠপাড়া) গ্রামের হাজারী মন্ডলের ছেলে শওকত আলী গত ২১ অক্টোবর জীবননগর থানায় দায়ের করা এজাহারে উল্লেখ করেন, স্বর্ণ চোরাচালান ও আত্মসাৎ করা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে একদল দুর্বৃত্ত তার ছেলেসহ আরও কয়েকজনকে অপহরণ করে। এ ঘটনায় বাদী আব্দুল মজিদ (৪০), মিজানুর রহমান রুবেল (৩০), লালন মন্ডল (৪২), আব্দুস সামাদ (৪৫), বিপ্লব হোসেন (৫০) ও শাহীনের (৩২) নাম উল্লেখসহ আরও ৩-৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করেন তিনি।
গত ১২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টার দিকে ও ১৩ অক্টোবর সকালে ভিন্ন সময় তাদের অপহরণ করা হয়। অপহৃত ব্যক্তিরা হলো, শফিকুল ইসলাম (৩৫), আনারুল ইসলাম (৫০), হাসান মিয়া (২৬), আবুল হোসেন (২৭) ও স্বপন ইসলাম (৪৪)।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান, পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলার নির্দেশনায় ও সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) আনোয়ারুল কবীরের তত্ত্বাবধায়নে ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চ (ডিবি), সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল এবং পুলিশ সুপারের বিশেষ একদল পুলিশের অংশগ্রহণে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের কুল্লা গ্রামের নির্জন এলাকায় অবস্থিত রেজাউল ইসলামের খামারবাড়ি থেকে অপহৃতদের উদ্ধার করা হয়। এসময় খামারের মালিক রেজাউল ইসলাম ও সহযোগী আব্দুল গফ্ফার পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন বিল্লাল হোসেন (৪০), সাগরিকা খাতুন (২৮) ও বিকাশ দেবনাথ (৩০)।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ১২ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে বগার মাঠের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় স্বর্ণ পাচারকারী শফিকুল ইসলামের কাছে থাকা ৫০টি অবৈধ স্বর্ণের বার খোয়া যায়। এ ঘটনার পর স্বর্ণের মালিকপক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের অপহরণ করে কুল্লা গ্রামের ওই খামারবাড়িতে বন্দি করে রাখে। এসময় অপহৃতদের ওপর অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন চালানো হয় এবং শফিকুল ইসলামের ৪টি আঙুল কেটে ফেলা হয়। গ্রেফতার ব্যক্তিদের চুয়াডাঙ্গা আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।