মুন্সীগঞ্জ: ছোট্ট শহর থেকে ছয় কেজি ওজনের এক পোষা বিড়াল উড়ে গেল ইতালির রোমে। এটি নিখাদ ভালোবাসা ও মমত্ববোধের গল্প। পোষা বিড়াল ‘ক্যান্ডি’কে সঙ্গে নিয়ে প্রবাসে পাড়ি দিয়েছেন মুন্সীগঞ্জের ইতালি প্রবাসী রিক্তা বেগম।
বুধবার (৫ নভেম্বর) দিবাগত রাতে পরিবারের সদস্যরা ক্যান্ডিকে সঙ্গে নিয়েই রওনা দেন ইতালির উদ্দেশে।
রিক্তা বেগম বলেন, ‘ক্যান্ডি শুধু আমাদের পোষা প্রাণী নয়, সে আমাদের পরিবারের সদস্য। আমরা বাইরে গেলে সে খাওয়া বন্ধ করে দেয়, মন খারাপ করে। তাই ওকে ছাড়া বিদেশ যাওয়া একেবারেই সম্ভব ছিল না।’ রিক্তার ছেলে শিথিলও একই আবেগ প্রকাশ করে জানায়, ‘ক্যান্ডি আমাদের আনন্দের উৎস। ও ছাড়া ঘরটা একদম ফাঁকা লাগে।’
২০২১ সালে অনলাইনে ১৫ হাজার টাকায় কেনা এই ‘ডমেস্টিক মিক্সড’ জাতের বিড়ালটি চার বছর ধরে পরিবারের স্নেহে বেড়ে উঠেছে। বর্তমানে এর ওজন প্রায় ছয় কেজি। ক্যান্ডিকে ইতালিতে নিয়ে যেতে পরিবারটিকে পেরোতে হয়েছে নানা আনুষ্ঠানিক ধাপ— বিশেষ খাঁচা, বিমানের টিকিট, সরকারি অনুমতি, পাসপোর্ট এমনকি ট্রানজিট বিমানবন্দরের ক্লিয়ারেন্স পর্যন্ত। সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা। কেবল ক্যান্ডির বিমানের টিকিটের জন্যই দিতে হয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশ মার্কিন ডলার।
মুন্সীগঞ্জ জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এম এ জলিল বলেন, ‘আমাদের জানা মতে, মুন্সীগঞ্জ থেকে এবারই প্রথম কোনো পোষা বিড়াল বিদেশে যাচ্ছে। এটি প্রাণীর প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’ তিনি জানান, ক্যান্ডির পাসপোর্টে যুক্ত করা হয়েছে তার ছবি, বয়স, জাত, ওজন, টিকা ও চিকিৎসার তথ্য।
টিটলার্ক পেটওয়েল সেন্টারের ভেটেরিনারি কনসালট্যান্ট ডা. শিবেন চন্দ্র লিটন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী ক্যান্ডির শরীরে একটি মাইক্রোচিপ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, যা স্ক্যান করলেই তার ইউনিক নম্বর দেখা যাবে।’
বিমানে ওঠার সময় ক্যান্ডি ছিল পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কেবিনে, হাতব্যাগের মতো বিশেষ খাঁচায়। ভালোবাসা, মমত্ব ও পারিবারিক বন্ধনের এই অসাধারণ গল্পটি এখন মুন্সীগঞ্জবাসীর মুখে মুখে— যেন প্রমাণ করে, ভালোবাসা কখনও সীমান্ত মানে না।