মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’- এ জানিয়েছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় জি-২০ সম্মেলন আয়োজন করা সম্পূর্ণ লজ্জাজনক।’ তার দাবি, কারণ দেশটির আফ্রিকানার জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন চলছে। একারনে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনে কোনো মার্কিন কর্মকর্তা অংশ নেবেন না।
শনিবার (৮ নভেম্বর) বিবিসির প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেন, জি-২০ সম্মেলন দক্ষিণ আফ্রিকায় হওয়াটা সম্পূর্ণ লজ্জাজনক। আফ্রিকানারদের হত্যা ও নিপীড়ন করা হচ্ছে, তাদের জমি ও খামার জোর করে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এ মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কোনো মার্কিন সরকারি কর্মকর্তা সেখানে অংশ নেবেন না।
ট্রাম্প আরও জানান, তিনি ২০২৬ সালের জি-২০ সম্মেলন যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে আয়োজন করতে আগ্রহী, যদি তিনি তখনও ক্ষমতায় থাকেন।
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার স্পষ্টভাবে জানাতে চায় যে আফ্রিকানারদের শুধুমাত্র শ্বেতাঙ্গ গোষ্ঠী হিসেবে উপস্থাপন করা ঐতিহাসিকভাবে ভুল।’
তারা আরও বলেছে, ‘এই গোষ্ঠীটি নিপীড়নের শিকার হচ্ছে — এমন দাবি বাস্তব তথ্য দ্বারা প্রমাণিত নয়।’
এ বছর জানুয়ারিতে আবার ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে ট্রাম্প বারবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘুদের বৈষম্যের শিকার করার অভিযোগ তুলেছেন। মে মাসে তিনি ওভাল অফিসে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার মুখোমুখি হয়েছিলেন এ ইস্যুতে।
ট্রাম্প প্রশাসন আফ্রিকানারদের শরণার্থী মর্যাদা দিয়েছে, দাবি করেছে দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি “গণহত্যা” চলছে। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউস ঘোষণা দেয় যে তারা শরণার্থী গ্রহণের সংখ্যা ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে সীমিত করবে এবং শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের অগ্রাধিকার দেবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার এসব দাবিকে ‘অবিশ্বাস্য ও তথ্য-অসহায়ক’ বলে অভিহিত করেছে এবং বলেছে, দক্ষিণ আফ্রিকানদের মধ্যে এই প্রস্তাব গ্রহণের হার ‘খুবই সীমিত’।
এ বছর ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি আদালতও এই “শ্বেতাঙ্গ গণহত্যা”র অভিযোগকে “সম্পূর্ণ কল্পিত” বলে খারিজ করে দেয়।
উল্লেখ্য, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিগুলোর অংশগ্রহণে আসন্ন জি-২০ সম্মেলন আগামী ২২ থেকে ২৩ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।