রংপুর: প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও সচিব না থাকায় রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) প্রায় দুই হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী চলতি নভেম্বর মাসের বেতন-ভাতা পাননি। ফলে মাসিক প্রায় ৫০ কোটি টাকার বিল-চেক আটকে আছে, বন্ধ রয়েছে সব দাফতরিক ও জরুরি সেবা কার্যক্রম। এতে নগর সেবায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটেছে এবং নিম্নবেতনভুক্ত ক্লিনারদের পরিবার অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
রসিক সূত্রে জানা গেছে, সাবেক সিইও উম্মে ফাতেমা সম্প্রতি বদলি হয়ে রংপুর জেলা পরিষদে যোগ দিয়েছেন। সচিব পদও গত এক মাস ধরে শূন্য। ব্যাংক চেকে প্রশাসক ও সিইও’র যৌথ সই বাধ্যতামূলক হওয়ায় অর্থ ছাড় সম্ভব হচ্ছে না। রসিকে বর্তমানে ২৫০ জন স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী, ৮০০ জন দৈনিক হাজিরাভিত্তিক কর্মী ও ৮০০ জন ক্লিনার রয়েছেন। ক্লিনারদের মাসিক বেতন ৩–৪ হাজার এবং হাজিরাভিত্তিক কর্মচারীদের ৯–১৮ হাজার টাকা।
ক্লিনার আকলিমা বেগম বলেন, ‘৮ তারিখ পার হয়ে গেলেও বেতন নেই, চাল-ডাল কিনতে পারছি না।’ মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘পরিবার নিয়ে অনাহারে আছি, কবে পাব জানি না।’ এক হাজিরাভিত্তিক কর্মচারী জানান, ‘বাড়িভাড়া, সন্তানের স্কুল ফি সব বন্ধ হয়ে গেছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনিক শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রতি মাসের ১ তারিখেই বেতন হতো। এবার সই জটিলতায় সব কার্যক্রম স্থবির। রাস্তা পরিষ্কার, পয়ঃনিষ্কাশন, লাইটিং—সব বন্ধ।’
রসিকের ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৬০০ কোটি টাকা, যার মাসিক গড় ৫০ কোটি।
সিটি করপোরেশনের প্রশাসক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে অস্থায়ী ব্যবস্থা বা নতুন সিইও নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি চলতি সপ্তাহেই সমাধান হবে।’
স্থানীয় সরকার বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘জরুরি ভিত্তিতে সচিব পদে একজন কর্মকর্তাকে প্রেষণে পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’