Monday 10 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু ২১ নভেম্বর, লটারির সম্ভাবনা ১৪ ডিসেম্বর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৫২

কোলাজ ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তিপ্রক্রিয়া এবারও ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে হবে। আগামী ১৯ নভেম্বরের মধ্যে এ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এরপর ২১ নভেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনগ্রহণ শুরু হবে। আবেদনপ্রক্রিয়া শেষে আগামী ১৪ ডিসেম্বর ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হতে পারে।

সোমবার (১০ নভেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক বি এম আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মাউশির মাধ্যমিক শাখার পরিচালক ও ভর্তি কমিটির সদস্য অধ্যাপক খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল জানান, লটারিতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় কারিগরি সহায়তা দেবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মোবাইল অপারেটর টেলিটক। অনলাইনে আবেদন নিয়ে লটারি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আবেদন ও লটারির তারিখ পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে মাউশি সূত্র জানায়, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১২-১৮ নভেম্বর প্রধান শিক্ষকরা অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ও শূন্যপদের তথ্য সফটওয়্যারে আপলোড করতে পারবেন। ১৩ নভেম্বর থেকে টেলিটক কাজ শুরু করবে। ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে ১৯ নভেম্বরের মধ্যে। এরপর ১৪ ডিসেম্বর লটারির সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। লটারিতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা ১৭-২১ ডিসেম্বর ভর্তি হতে পারবে।

জানা যায়, প্রথমদিকে শুধু প্রথম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের লটারির মাধ্যমে ভর্তি করানো হতো। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে ২০২১ সালে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রমও লটারির আওতায় আনা হয়। এরপর থেকে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে ভর্তিতে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে অভিভাবকদের একাংশ ও শিক্ষকরা ভর্তি পরীক্ষার দাবি তুললেও তাতে সায় দেয়নি সরকার।

সরকারি-বেসরকারি স্কুল মিলিয়ে সবশেষ শিক্ষাবর্ষে ৫ হাজার ৬২৫টি স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। এসব স্কুলে শূন্য আসন ছিল ১১ লাখ ১৭ হাজারের কিছু বেশি। বেসরকারি স্কুলে আসন সংখ্যা বেশি। সরকারি স্কুলে তুলনামূলক আসন একেবারে কম। এবারও আসন সংখ্যা প্রায় কাছাকাছি থাকতে পারে। ফলে সরকারি স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে তুমুল প্রতিযোগিতা হবে।

স্কুলে ভর্তির ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে দেশের চার হাজার ৯৪৫টি বেসরকারি স্কুলে মোট ভর্তিযোগ্য আসন ছিল প্রায় ১০ লাখ আট হাজারের কিছু বেশি। অন্যদিকে ৬৮০টি সরকারি স্কুলে শূন্য আসন ছিল প্রায় এক লাখ ৯ হাজার।

মাউশির মাধ্যমিক শাখার সহকারী পরিচালক জিয়াউল হায়দার হেনরী জানান, গত বছর সরকারি-বেসরকারি স্কুল মিলিয়ে মোট আবেদন জমা পড়েছিল ৯ লাখ ৬৫ হাজার ৭০৪টি। সরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য আবেদন করেছিল ছয় লাখ ২৫ হাজার ৯০৪ জন, যা শূন্য আসনের প্রায় ছয়গুণ। আর বেসরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য আবদেন জমা পড়েছিল তিন লাখ ৪০ হাজারের মতো। ফলে সব শিক্ষার্থী ভর্তির পরও বেসরকারি স্কুলে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ আসন ফাঁকা পড়েছিল।

অভিভাবক জিয়াউল হায়দার হেনরী জানান, বেসরকারির ক্ষেত্রে আসলে সন্তানকে সবাই ভালো স্কুলে ভর্তি করাতে চান। হাতে গোনা কিছু স্কুল ছাড়া অধিকাংশ স্কুলের জন্য কোনো আবেদন জমা পড়ে না। সরকারি এবং ভালো বেসরকারি স্কুলে বেশি প্রতিযোগিতা হয়।

মাউশি সূত্রমতে, আগামী বছরের ভর্তি নীতিমালায় বেশিরভাগ বিষয় আগের মতোই থাকতে পারে। অর্থাৎ, আবেদন ফি থাকবে ১১০ টাকা। ভর্তি ফি মফস্বল এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেশন চার্জসহ সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা; উপজেলা ও পৌর এলাকায় এক হাজার টাকা; মহানগর এলাকায় (ঢাকা বাদে) সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা।

ঢাকা মহানগর এলাকার এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নিতে পারবে পাঁচ হাজার টাকা। আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভর্তি ফি নিতে পারবে আট হাজার টাকা। তবে ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি ফি ১০ হাজার টাকা।

এছাড়া রাজধানীর প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়ন ফি তিন হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না। একই প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রতি বছর সেশন চার্জ নেওয়া যাবে। তবে পুনঃভর্তি ফি নেওয়া যাবে না।

জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী প্রথম শ্রেণিতে ছয় বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি তারিখে শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স পাঁচ বছর এবং ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য হবে। অর্থাৎ সর্বনিম্ন জন্মতারিখ হবে ১ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত এবং সর্বোচ্চ বয়সসীমা সাত বছর পর্যন্ত অর্থাৎ, জন্মতারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত।

সারাবাংলা/ইউজে/এনজে
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর