ঢাকা: আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে গণতান্ত্রিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। তিনি বলেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি নয়, বরং দুর্নীতিগ্রস্ত ঋণখেলাপি ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি সংসদ গঠিত হবে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় শ্রমিক শক্তি আয়োজিত ‘জুলাই সনদে শ্রমিক শ্রেণির রাজনৈতিক অবমূল্যায়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সামান্তা শারমিন বলেন, ‘এই নির্বাচন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ নয়। বরং এটি এমন এক প্রক্রিয়া, যা জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে একদল প্রভাবশালী শ্রেণির হাতে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ তুলে দেবে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, দেশের আইন ও প্রশাসনিক কাঠামো এখনো ঔপনিবেশিক শাসনের উত্তরাধিকার বহন করছে, যা নাগরিক স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করছে।
তার ভাষায়, ‘আমরা আজও সেই ব্রিটিশ আমলের কাঠামোতে বন্দি। এই ঔপনিবেশিক শিকল না ভাঙলে প্রকৃত সার্বভৌমত্ব অর্জন সম্ভব নয়। আমাদের সংগ্রাম কেবল রাজনৈতিক নয়, এটি একটি চলমান বিরোধী-ঔপনিবেশিক আন্দোলন।’
আরও পড়ুন-শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়েছেন, তারেক রহমান পালাবেন কই: নাসীরুদ্দীন
বিচার বিভাগীয় ও প্রশাসনিক সংস্কারের ব্যর্থতা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। ঐক্য কমিশনের ব্যর্থতাকে ‘জাতির সঙ্গে গভীর বিশ্বাসঘাতকতা’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুলিশ ও প্রশাসন সংস্কারের কোনো বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর ফলে জনগণ আবারও প্রতারিত হয়েছে।’
সামান্তা শারমিন আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো এখন কেবল জোট, আসন আর ক্ষমতার হিসাব নিয়ে ব্যস্ত। অথচ জনগণের অধিকার, বিচারব্যবস্থা বা নাগরিক স্বাধীনতার প্রশ্নে কোনো দলের প্রকৃত অঙ্গীকার নেই।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমন এক ষড়যন্ত্রমূলক পরিবেশ তৈরি করছে, যা ২০০৭ সালের ১/১১ সময়ের মতোই বিপজ্জনক। রাজনৈতিক দলগুলো এখন সামরিক প্রশাসনের সঙ্গে আপস করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে।’
তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা যারা ‘জুলাই সনদ’-এর চেতনায় বিশ্বাসী, তারা শহিদদের রক্ত ও ত্যাগ ভুলে যেতে পারি না। এনসিপি জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে খোলা মনোনয়নপত্র বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে নাগরিকরা নিজেরাই প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পান।’