Thursday 13 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নুরাল পাগলার দরবারে হামলার ২ মাস পর আদালতে নতুন মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৩ নভেম্বর ২০২৫ ২২:৪৫ | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:১৪

রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ছবি: সারাবাংলা

রাজবাড়ী: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক মোল্লা ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলার দুই মাসের বেশি সময় পর নতুন মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক,জামায়াত-বিএনপি-এনসিপি নেতা ও মসজিদের ইমামসহ একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) নুরুল হক মোল্লার শ্যালিকা শিরিন বেগম রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের আমলি আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামজিদ হোসেন অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী শরিফুল ইসলাম বলেন, মামলায় ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত পরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে।

বিজ্ঞাপন

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খন্দকার আবদুল মুহিতকে। এছাড়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- গোয়ালন্দ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির জালাল উদ্দিন প্রামাণিক, উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও ইমান আকিদা রক্ষা কমিটির সদস্যসচিব আইয়ুব আলী খান, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম মাহাবুব রাব্বানী, আলজামিয়া নিজামিয়া আরাবিয়া কওমি মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আমিনুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম, মডেল মসজিদের ইমাম মুফতি আজম, বড় মসজিদের ইমাম হাফেজ আবু সাঈদ (কারাগারে আছেন), জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গোয়ালন্দ উপজেলা শাখা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী রাকিব হাসান ও যুগ্ম সমন্বয়কারী নাজমুল ইসলাম, ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী মকিম মণ্ডল, দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার গোয়ালন্দ উপজেলা সংবাদদাতা মেহেদুল হাসান আক্কাছ প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, গত ৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঈমান-আকিদা রক্ষা কমিটির ব্যানারে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। তারা দরবারে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় অর্ধশত মানুষ আহত হন এবং নুরাল পাগলার এক ভক্ত রাসেল মোল্লা নিহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে পুলিশের ওপরও হামলা চালানো হয় এবং দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে ১০ থেকে ১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে হামলাকারীরা শরিয়ত পরিপন্থীভাবে দাফনের অভিযোগ তুলে নুরাল পাগলের লাশ কবর থেকে তুলে আনে। একপর্যায়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দের পদ্মার মোড় এলাকায় লাশটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

নিহত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা ৮ই সেপ্টেম্বর রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা করেন। এতে রাসেল হত্যাসহ নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, কবর থেকে তার লাশ উত্তোলন করে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে নিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। মামলাটিতে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার মানুষকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়। ওই মামলায় ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

এছাড়া পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ৬ সেপ্টেম্বর রাতে থানার উপপরিদর্শক সেলিম মোল্লা ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর