ঢাকা: ঢাকার ভোরের আলো তখনও পুরোপুরি ফোটেনি। ঠিক সেই সময়টিতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ছবিটিতে দেখা যায়—সানজিদা ইসলাম তুলির মায়ের হাত ধরে আছেন তিনি। সেই হাতধরা মুহূর্তই যেন হয়ে ওঠে নিখোঁজ এক সন্তানের দীর্ঘ অপেক্ষার গল্পের প্রতীক।
ছবির ক্যাপশনে ফখরুল লিখেছেন, “সানজিদা ইসলাম তুলির মা, আর আমার হাত।”
সহজ বাক্য, কিন্তু তাতে লুকিয়ে আছে এক যুগের বেদনা—গুম হওয়া ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আকুতি।
ঢাকা-১৪ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সানজিদা ইসলাম তুলি। রাজপথে তার সংগ্রাম শুধু রাজনীতি নয়—তার ভেতর লুকোনো আছে পরিবারের ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি। ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর রাতে র্যাবের একটি দল তুলে নিয়ে যায় তার ভাই, স্থানীয় বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনকে। সেই রাতের পর আর কোনোদিন ফিরে আসেননি সুমন।
তুলির মা এখনো ছেলের ফিরে আসার অপেক্ষায়। সেই অপেক্ষার কাঁটাদার সময়ই যেন ধরা পড়ে যায় ফখরুলের সেই ছবির হাতধরা মুহূর্তে।
নিজের পোস্টে ফখরুল লিখেছেন—“তুলির ভাই সুমন, ছাত্রদল নেতা, আজও ফেরেনি। এমন অনেক সুমন আজও ফেরেনি! তুলিদের সংগ্রাম জুলাই এনেছে। আয়না ঘরের মতো সত্য বের হয়ে এসেছে। কিন্তু তুলিরা আজও সংগ্রাম করছে। তুলিরা, আমাদের আমানত।”
অর্থাৎ, গুম হওয়া অসংখ্য পরিবারের অদেখা কান্নার প্রতি তিনি ইঙ্গিত করেছেন। তাদের সংগ্রাম চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে রাষ্ট্রের লুকোনো সত্য।
ছবির ভেতরের সেই হাত—এটি শুধু একজন রাজনীতিকের সহানুভূতির স্পর্শ নয়; এটি হলো এক মা হারানো সন্তানের ভরসা, এক রাজনৈতিক আন্দোলনের মানবিক রূপ, এবং বহু গুম হওয়া পরিবারের দীর্ঘশ্বাসকে নীরবে বহন করে নেওয়ার প্রতীক।