Sunday 16 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লক্ষ্মীপুরে নদী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে গণসমাবেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৭ নভেম্বর ২০২৫ ০০:৩৯

বাঁধ প্রকল্পের ধীরগতি নিয়ে প্রতিবাদী গণসমাবেশ অতিথিরা।

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরে মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনরোধে ৩১শ’ কোটি টাকার বাঁধ প্রকল্পের ধীরগতি নিয়ে প্রতিবাদে গণসমাবেশ হয়েছে। প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে এই গণসমাবেশে রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় বাসিন্দারা একযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

রোববার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার কাদিরপন্ডিতেরহাট বিদ্যালয় মাঠে এ আয়োজন করা হয়। জাতীয় ইমাম সমিতির জেলা সভাপতি মাওলানা গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির সহ-শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান।

স্থানীয় বাসিন্দা সাঈদ মু. আনোয়ার হোসাইনের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী ও লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী এআর হাফিজ উল্যাহ, কমলনগর উপজেলা জেএসডির সভাপতি আব্দুল মোতালেব।

বিজ্ঞাপন

লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এবং লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী এআর হাফিজ উল্যাহ বিগত জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে যারা এমপি হয়েছেন, তারা যদি সময়মতো সঠিক ও দক্ষ পদক্ষেপ নিতেন, তবে রামগতি-কমলনগরের এতগুলো এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেত না। আমরা দ্রুত এই নদীর রক্ষা বাঁধ বাস্তবায়ন চাই।’

বিএনপি নেতা সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের কাজে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি সরাসরি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘যা হইছে বাণিজ্য, আল্লাহর ওয়াস্তে আর বাণিজ্য করবেন না। কিছু কিছু টেন্ডার, রিটেন্ডার হয়েছে। সেগুলোর সুন্দরভাবে কাজ করেন।’

গণসমাবেশে নিজান এই প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে দ্রুত ও মানসম্মত কাজ শেষ করার দাবি জানান।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ-জামান খান প্রকল্পের ধীরগতির অভিযোগের বিষয়ে জানান, প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ চলমান রয়েছে এবং কাজের মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়েছে।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আগামী জুনের মধ্যে বাঁধ প্রকল্পটি পুরোপুরি দৃশ্যমান হবে।’

একই সঙ্গে তিনি জানান, কাজ না করে পালিয়ে যাওয়া ঠিকাদারদের অংশে পুনরায় টেন্ডার করা হয়েছে, দ্রুততার সঙ্গে কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বাসিন্দাদের জন্য এই প্রকল্পটি ছিল দীর্ঘ প্রতীক্ষিত। ২০২১ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ নদী তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রায় ৩ হাজার ৮৯ কোটি টাকার এই বৃহৎ প্রকল্পের অনুমোদন দেন।

সেই লক্ষ্যে, ২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি কমলনগরের সাহেবেরহাট ইউনিয়নের মেঘনা এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে কাজের উদ্বোধন করেন সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক।

তবে উদ্বোধনের পর থেকেই প্রকল্পটি ধীরগতিতে এগোতে থাকে; একাধিকবার কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর কয়েকজন ঠিকাদার কাজ অসমাপ্ত রেখে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ ওঠে। বর্তমানে, যেসব ঠিকাদার কাজ না করে চলে গেছেন, সেই অসম্পূর্ণ কাজগুলোর জন্য পুনরায় টেন্ডার দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর