ঢাকা: দেশে ডলার সংকট নেই। ব্যবসায়ীদের পণ্য আমদানির জন্য ডলার সংগ্রহ করতে আর আগের মত ঝামেলা পোহাতে হয় না। এ জন্য পণ্য আমদানিতে আর কোনো বাধা নেই। বিশেষ করে রমজান উপলক্ষ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছোলা, খেজুর, মটর ডাল, চিনিসহ ছয় ধরনের পণ্য আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলার হার বেড়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
রমজান মাসে এসব পণ্যের চাহিদা সাধারণত অনেক বেড়ে যায়। এ জন্য আগেভাগেই পণ্যগুলো আমদানির বাড়তি ঋণপত্র খোলা বাড়িয়েছেন ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ীরা। আর ডলারের দর স্থিতিশীল রয়েছে। আজ ব্যাংকগুলোয় আমদানির জন্য ডলারের দাম ছিল ১২২ টাকা ৮০ পয়সা।
তিনি এক প্রশ্নের জাবাবে বলেন, ‘পেঁয়াজ, রসুন ও আদা আমদানিতে ঋণপত্র খোলা কমে গেছে। এর মধ্যে সামনের মাসে পেঁয়াজের নতুন মৌসুম শুরু হবে বলে এটির জন্য এলসি খোলা কমেছে। অবশ্য পেঁয়াজ আমদানিতে সরকারের অনুমোদন নেই। তবে রজমানে যে পরিমাণ পণ্য দরকার তার চেয়ে বেশি পণ্য আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে। সাধারণত তিন মাসের কম সময় লাগে পণ্য আসতে। সেই হিসাবে রমজানের আগেই বাকি পণ্যের চালান দেশে পৌঁছাবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের আমদানির তথ্য বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় খেজুর আমদানিতে ঋণপত্র খোলার হার বেড়েছে ২৩১ শতাংশ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ৩ হাজার ৬৩ মেট্রিক টন খেজুর আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছিল। চলতি বছরের একই সময়ে ১০ হাজার ১৬৫ মেট্রিক টন খেজুর আমদানির এলসি খোলা হয়েছে। মটর ডালের জন্য ঋণপত্র খোলার হার ২৯৪ শতাংশ বেড়েছে, যা আমদানি হওয়া ৯টি পণ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ৪১ হাজার ৮১৫ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে চলতি বছরের একই সময়ে বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮১০ মেট্রিক টন।
এদিকে সয়াবিনের ঋণপত্র খোলার হার ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৮৬৫ মেট্রিক টনের, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩ লাখ ৬১ হাজার ৫৬৪ মেট্রিক টন। একই সময়ে ৫৪ হাজার ৫১৬ মেট্রিক টন ছোলা আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের ৪২ হাজার ৮৯১ মেট্রিক টনের চেয়ে ২৭ শতাংশ বেশি। এ সময় ডাল আমদানির ঋণপত্র ২৬ হাজার ৯১২ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ৫০ হাজার ৩৫৫ মেট্রিক টন হয়েছে। ২ লাখ ৯২ হাজার ৫৭২ মেট্রিক টন চিনি আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক জুলাই-সেপ্টেম্বরে ঋণপত্র খোলা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘দেশে ব্যাংক খাত ঘুরে দাঁড়াতে একের পর এক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সেই ধারিবাহিতকায় ৫ শরীয়াহ ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই ৫ ব্যাংক নিয়ে গঠিত সম্মলিত ইসলামী ব্যাংকের জন্য বোর্ড গঠন করেছে সরকার। সেই বোর্ডে পরিবর্তন আসতে পারে, যার ইঙ্গিত গভর্নর আগেই দিয়েছেন।’