ঢাকা: গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিলো একটি গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা, কিন্তু তারা এখনও সেই দায়িত্ব পালনে মনোযোগী হয়নি। একটি সেরা নির্বাচন উপহার দিতে হলে যা যা করতে হয়, বর্তমান সরকার তা করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক্স ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদ খান বলেন, ‘পুলিশ এখনও ঠিকমতো কাজ করছে না। এ পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর পক্ষেই একমাত্র সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব। নির্বাচন নিয়ে প্রতিযোগিতা থাকবে, তবে হিংসা-সংঘাত থাকা উচিত নয়। এ বিষয়ে সরকারের প্রতি সব রাজনৈতিক দলের চাপ অব্যাহত রাখা দরকার।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আদৌ হবে কিনা জনগণের মধ্যে সংশয় আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় আধিপত্যশক্তি ও আওয়ামী লীগ নির্বাচন চায় না। তারা চায় না দেশ নির্বাচনের পথ ধরে স্বাভাবিক হোক। তারা আরেকটি এক এগারো চায়। তাই আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আদায় করে নিতে হবে। না হলে গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে, ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে। সেনাবাহিনীর প্রতি তিনি আহ্বান জানান জাতির পাশে দাঁড়ানোর জন্য।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের রায়কে স্বাগত জানিয়ে রাশেদ খান বলেন, ‘শেখ হাসিনা বুঝেছিলেন কেয়ারটেকার ব্যবস্থা থাকলে তিনি ফ্যাসিস্ট হওয়া সম্ভব নয়, তাই তিনি সেই ব্যবস্থা বিলোপ করেছেন। জনগণের সঙ্গে মোনাফেকি করা যায় না। এই দেশে ফ্যাসিস্ট হয়ে কেউ টিকে থাকতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না।’
তিনি অভিযোগ করেন, অতীতে রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী ও সরকারি চাকরিতে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। চাকরিতে মেধাকে প্রধান বিবেচনায় আনতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাশেদ খান বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসর দলগুলোকে সংলাপে না ডেকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি দাবি করেন, জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া উচিত নয় এবং জনগণকে এসব দলকে বয়কট করতে হবে। তার ভাষায়, ‘যে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়েছে, তাদের কোনো নেতাকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না।’
অতীতের ডামি এমপিদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হলে আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাসীরা’ নির্বাচনে বিঘ্ন ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। আওয়ামী লীগের বিচার আদালতেই হবে, আর সাধারণ কর্মীদের ওপর গণঅভ্যুত্থানের শক্তি ব্যবহার করা হবে না বলেও মন্তব্য করেন রাশেদ খান।
সেমিনারে তিনি আরও বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের ওপর এবং সেই পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব এখন সরকার ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর।