Thursday 20 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কৈলাশটিলার বন্ধ কূপে গ্যাসের সন্ধান, প্রতিদিন গ্রিডে যুক্ত হবে ৫০ লাখ ঘনফুট

ডিস্ট্রিক্ট করসপন্ডেন্ট
২১ নভেম্বর ২০২৫ ০০:১১ | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৫ ০০:১৬

কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্র। ছবি: সংগৃহীত

সিলেট: প্রায় ৬ বছর বন্ধ থাকা সিলেটের কৈলাশটিলা গ্যাসফিল্ডের ১ নম্বর কূপে নতুন একটি স্তরে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। যা থেকে প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস। ফিল্ডটিতে আনুমানিক মজুদ রয়েছে ১৬ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। এ বিষয়ে যেকোনো সময় ঘোষণা দিতে পারে সিলেট গ্যাসলিল্ড কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, সিলেট গ্যাস ফিল্ডের অধীনে কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ডে নয়টি কূপ রয়েছে। এরমধ্যে ১ নম্বর কূপে ১৯৬১ সালে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায। একবার বিরতি দিয়ে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলিত হয়। ২০২৩ সাল থেকে দেশের পুরনো কূপগুলো নতুন করে ওয়ার্কওভার শুরু হয়। এর মধ্যে সিলেট গ্যাসফিল্ডের আওতাধীন ১৪টি কূপের ওয়ার্কওভার চলছে। কৈলাশটিলা-১সহ এরই মধ্যে সাতটি কূপের ওয়ার্কওভার সম্পন্ন হয়েছে। সাতটিতেই গ্যাসের মজুদ পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

কৈলাশটিলার-১ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার শেষে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট গ্যাসফিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌলশী মো. আবদুল জলিল প্রামানিক বলেন, ‘গ্যাসের মজুদ পাওয়া গেছে। এখনো কিছু কাজ বাকি আছে। এসব কাজ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে ঘোষণা দিতে পারব।’

সিলেট গ্যাস ফিল্ড সূত্রে জানা গেছে, দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে জাতীয় গ্রিডে এ গ্যাস যুক্ত হতে পারে। সূত্র আরও জানায়, প্রায় চার মাস আগে কৈলাশটিলায়-১ নম্বর কূপ ওয়ার্কওভার শুরু করে বাপেক্স। ওয়ার্ক ওভারকালে প্রায় ২২ হাজার ফুট গভীরে গ্যাসের সন্ধান মেলে।

এদিকে গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আওতাধীন রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের ৩ নম্বর পুরোনো কূপ থেকে নতুন করে দৈনিক ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। ফলে সিলেটের কূপগুলো প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।

এর আগে গত বছরের ২২ অক্টোবর সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ৭ নম্বর কূপে খননকাজ শেষে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। হরিপুরে ৭ নম্বর কূপ থেকে দৈনিক ৭ থেকে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পরীক্ষামূলকভাবে উত্তোলন হচ্ছে। কূপের ১ হাজার ২০০ মিটার গভীরতায় এ গ্যাস পাওয়া গেছে। তারও আগে ওই বছরের ২৪ মে খননকাজ শেষে সিলেটের কৈলাশটিলা গ্যাস ক্ষেত্রের ৮ নম্বর কূপে দৈনিক ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার যায়। কূপের ৩ হাজার ৪৪০ থেকে ৫৫ হাজার ফুট গভীরতায় গ্যাস পাওয়া যায়।

জানা যায়, সিলেট গ্যাসফিল্ড লিমিটেডের আওতাধীন কূপগুলোতে চলমান আরও কয়েকটি প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ হবে। খনন চলমান থাকা অন্য সকল কূপে আশানুরূপ গ্যাস পাওয়া গেলে শুধুমাত্র এই কোম্পানি থেকে প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে ২৫০ মিলিয়ন গ্যাস যুক্ত করা সম্ভব বলছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কয়েকটি অনুসন্ধান কূপ ও ওয়ার্কওভারের কাজ চলছে।

গত বছরের ২৭ জানুয়ারি সিলেট গ্যাসফিল্ডের আওতাধীন রশিদপুরের ২ নম্বর কূপে গ্যাসের নতুন স্তরের সন্ধান মেলে। যার পরিমাণ প্রায় ১৫৭ বিলিয়ন ঘনফুট। তারও আগে ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর দেশের সবচেয়ে পুরানো গ্যাসক্ষেত্র হরিপুরের ১০ নম্বর কূপে গ্যাসের সন্ধান মেলে। খনন কাজ শেষে ওইদিন গ্যাস প্রাপ্তির তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল)। আর ওই বছরের ২২ নভেম্বর সিলেটের কৈলাশটিলায় পরিত্যক্ত ২ নম্বর কূপ থেকে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। এখান থেকে দৈনিক ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।

সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায় ১৯৫৫ সালে। এরপর আবিষ্কার হতে থাকে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র। বর্তমানে এসজিএফএল’র আওতায় পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। সেগুলো হলো- হরিপুর গ্যাসফিল্ড, রশীদপুর গ্যাসফিল্ড, ছাতক গ্যাসফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাসফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাসফিল্ড। এর মধ্যে ছাতক গ্যাসফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।

সারাবাংলা/পিটিএম
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর