রাজশাহী: বাক-বিতণ্ডাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দুই সহকারী অধ্যাপক সাজু সরদার ও তানজিল ভূঞাকে একাডেমিক ও বিভাগীয় সব কার্যক্রম থেকে সাময়িক বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
সোমবার (২৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এবং প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয় নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রথম সভার সুপারিশের ভিত্তিতেই কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত জানায়। তদন্ত চলাকালীন তারা সব ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই তদন্ত কমিটির প্রথম সভার সুপারিশে তাদের বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হয়েছে।’
এর আগে, গত বুধবার (১৯ নভেম্বর) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এবং প্রাসঙ্গিক অন্যান্য অভিযোগ তদন্তে সিন্ডিকেট সদস্য ও আরবি বিভাগের প্রফেসর ড. মো. নিজাম উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ও ১১ নভেম্বর ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানজিল ভুঞাকে চরিত্রহীন, লম্পট ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তার বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিভাগের অফিসকক্ষে তালা ঝুলিয়ে ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে এই আন্দোলন করেন তারা।
যা বলছেন অভিযুক্ত দুই শিক্ষক
এ বিষয়ে তানজিল ভূঞা বলেন, ‘প্রথমে চেয়ারম্যান নিয়োগ নিয়ে দ্বন্দ্বটি তৈরি হয়। তারপর গত ৬ থেকে ৯ নভেম্বর ওয়ার্ল্ড ফ্রিডম ডে উপলক্ষ্যে একটা মেলা হয়। তখন সেই মেলায় সাজুকে কোনো দায়িত্ব না দিয়ে আমাকে সব দায়িত্ব দেওয়া হয়। মেলা নিয়ে আমাদের একটা মিটিং হয়। সেই মিটিংয়ে একটা বাক-বিতণ্ডা হয়। তখন এক পর্যায়ে আমি তাকে যখন বলি ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা আপনি খেয়েছেন, এরপর সে আমাকে আমার ছাত্রীর সঙ্গে বিয়ের কথা তুলে খোটা দেন। এরপর মেলার তিন দিন আগে মেলা বানচালের উদ্দেশ্যে প্রায় ছয় মাস আগের একটি ভিডিও সামনে আনেন। যেখানে আমার স্ত্রীকে দেখা যায়, আমার দিকে একটি খাতা ছুড়ে মারছে। এর পর থেকেই আমার নানান বিষয় তুলে সে আমাকে প্রতিনিয়ত হেনস্থা করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলনটা প্রথমে তাকে বহিষ্কার করার জন্য হচ্ছিল। কিন্তু পরে সেটা আমার ওপরেও আসে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সকল প্রমাণ দেখানোর পরও তারা বলে আমাদের দু’জনের এই কোন্দলের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। সেই কারণ নিয়ে আজ রাকসু প্রশাসনের কাছে গেলে প্রশাসন সিদ্ধান্ত দেয় যে, আমাদের দুজনের কারণে যেহেতু ঘটনাটি ঘটেছে এবং বিভাগে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তাই দু’জনকেই বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেওয়া হলো।’
অভিযোগের বিষয়ে সাজু সরদার বলেন, ‘প্রশাসনের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেই সব ক্লিয়ারভাবে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেখানকার সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই এই বিজ্ঞপ্তিটি দেওয়া হয়েছে।’