ঢাকা: জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহিদ ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২১তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পিছিয়ে ২৭ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ দিন ধার্য করেন। আগামী ২৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলের সামনে ২১তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ উপস্থাপন করা হবে। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন- অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
এর আগে, গত ২৩ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ২০ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য সাজু রায় নামে এক শিক্ষার্থী সাক্ষ্য দেনর। ট্রাইব্যুনাল-২ এ সাক্ষী সাজুর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
সাক্ষ্য দিতে এসে সাজু আদালতে বলেন, দুপুর দেড়টায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটের সামনে পৌঁছাই। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান নিয়েছিল পুলিশ। আমি মিছিলের পেছনে ছিলাম। ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের কথাবার্তা হচ্ছিল। হঠাৎ আমাদের ওপর আক্রমণ চালান তারা। আমরা ছোটাছুটি শুরু করি। সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপসহ লাঠিচার্জ করতে থাকেন পুলিশ সদস্যরা। আমাদের মধ্যে একজন ছাত্র আহত হন। আমি তখন পার্কের মোড়ে ছিলাম। কিছু শিক্ষার্থী সরদারপাড়ার দিকে ছিলেন। আমরা আবার সবাই গেটে অবস্থান নিই। তখন বিশ্ববিদ্যালয় গেটের ভেতর থেকে পুলিশ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আমাদের দিকে তেড়ে আসেন। ওই সময় পুলিশ আমাদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও গুলি ছুড়তে থাকলে ফের পালানো শুরু করি। কিন্তু আবু সাঈদ ওই স্থানে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকেন। তখন গুলি করে পুলিশ। আবু সাঈদ নিজের হাতে থাকা লাঠি নাড়িয়ে রক্ষার চেষ্টা করেন। পরে রোড ডিভাইডার পার হয়ে পড়ে যান তিনি। সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে তাকে তুলে পার্কের মোড়ের দিকে নিয়ে আসেন। আমিও তাদের সঙ্গে যুক্ত হই। আমরা তিনজন মিলে তাকে একটি রিকশায় করে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে গ্রেফতার রয়েছেন ছয় জন। তারা হলেন- এএসআই আমির হোসেন, বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। বাকি ২৪ আসামি এখনও পলাতক।