ঢাকা: ব্যাংক খাতে আমানতকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা জোরদার করতে ‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। একই সঙ্গে
‘ব্যাংক আমানত বিমা আইন, ২০০০’ বাতিল করা হয়েছে।
রোববার (২৩ নভেম্বর) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানানো হয়।
নতুন আইন অনুযায়ী, ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিতে থাকা আমানত নির্ধারিত সীমার মধ্যে সুরক্ষিত থাকবে এবং প্রয়োজন হলে তা ফেরত নিশ্চিত করা হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতায় পৃথক ‘আমানত সুরক্ষা বিভাগ’ গঠন করা হবে। বিভাগটি প্রিমিয়াম সংগ্রহ, তহবিল ব্যবস্থাপনা, সদস্য প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন, সুরক্ষিত আমানত পরিশোধ ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
অধ্যাদেশে ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানির জন্য দুটি পৃথক আমানত সুরক্ষা তহবিল গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রিমিয়াম, জরিমানা, বিনিয়োগ আয় ও অন্যান্য অনুমোদিত উৎস থেকে এই তহবিল পরিচালিত হবে। তহবিলের প্রশাসনিক দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পালন করবে, যা ট্রাস্ট বোর্ড হিসেবে কাজ করবে।
নতুন লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিকে নির্ধারিত হারে প্রারম্ভিক প্রিমিয়াম জমা দিতে হবে। সব ব্যাংক কোম্পানি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সদস্য হলেও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো ২০২৮ সালের ১ জুলাই থেকে এ সদস্যপদে অন্তর্ভুক্ত হবে। ঝুঁকিভিত্তিক প্রিমিয়াম ত্রৈমাসিকভিত্তিক আদায়ের বিধানও রাখা হয়েছে।
তবে সরকারি, বিদেশি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কিছু নির্দিষ্ট শ্রেণির আমানত এই সুরক্ষার আওতার বাইরে থাকবে। সাধারণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের আমানত সুরক্ষাযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে এবং নির্ধারিত সীমার মধ্যে সুরক্ষা পাওয়া যাবে।
কোনো ব্যাংক বা ফাইন্যান্স কোম্পানির অবসায়ন বা রেজুলেশনের ক্ষেত্রে আমানত সুরক্ষা বিভাগ সরাসরি সুরক্ষিত অর্থ ফেরত দেবে। প্রয়োজনে রেজুলেশন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ব্রিজ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা বা তৃতীয় পক্ষকে সম্পদ হস্তান্তরের সিদ্ধান্তও কার্যকর করা যাবে।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে দেশি-বিদেশি নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই, তথ্য বিনিময় ও কারিগরি সহায়তা নেওয়ার ক্ষমতাও বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রদান করা হয়েছে।