Monday 24 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শান্তি অর্জন করা কঠিন বিষয়: ত্রাণ উপদেষ্টা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:০৯ | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:২৫

বক্তব্য দিচ্ছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক বলেছেন, পৃথিবী-দেশ-সমাজ কিংবা ব্যক্তিজীবনে সবচেয়ে কঠিন বিষয় হলো শান্তি অর্জন করা। শান্তি প্রতিষ্ঠা বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের বিষয়। শান্তি একদিনে অর্জিত হয় না; এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যা ব্যক্তিগত আচরণ, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র এবং বৈশ্বিক ব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে গড়ে ওঠে।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে দ্য হাঙ্গার প্রোজেক্ট বাংলাদেশ আয়োজিত তিন শতাধিক পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ সদস্যের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় শান্তি সহায়ক সম্মেলন ২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, যে সমাজে ন্যায়, মানবিকতা, শিষ্টাচার, সহমর্মিতা এবং দায়িত্ববোধ লালিত হয়, সেই সমাজেই স্থায়ী শান্তির ভিত্তি গড়ে ওঠে। আর সেই মানসিকতা জাগ্রত করাটাই আজকের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ‘সংঘাত নয়, শান্তি সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ি’র সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত।

উপদেষ্টা বলেন, ‘‘দ্য হাঙ্গার প্রোজেক্ট যে ‘শান্তি সহায়ক’ ধারণাটি সামনে এনেছে, তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। আমাদের সমাজে যে অসহিষ্ণুতা, উত্তেজনা ও অস্থিরতা ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে-তার পেছনে দীর্ঘদিনের নানা বঞ্চনা ও ক্ষোভ জমে আছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার যে গণঅভ্যুত্থান আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, তা ছিল অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে, বিচারহীনতার বিরুদ্ধে এবং অস্থিরতার বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ মানুষের সমষ্টিগত প্রকাশ।’’

তিনি বলেন, ‘শান্তি যদিও আমাদের চূড়ান্ত কামনা, কিন্তু অনেক সময় সেই শান্তির পথ আমাদের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়াতে বাধ্য করে। স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তাই ন্যায়, জবাবদিহিতা , ত্যাগ, সমতা ও মানবিকতার ভিত্তি মজবুত করা একান্ত প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, শান্তিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে পরিবার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সরকার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম-এমনকি ব্যক্তি পর্যায়েও-সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। শান্তি প্রতিষ্ঠা কেবল নীতিগত বা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিষয় নয়; এটি মানুষের মনন, মূল্যবোধ ও আচরণের ওপর নির্ভরশীল একটি সামাজিক প্রক্রিয়া। প্রত্যেক ব্যক্তি শান্তি-নির্মাণের একটি শক্তিশালী স্তম্ভ হতে পারেন।

উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আপনারা যারা তৃণমূল পর্যায়ে নীরবে কাজ করছেন-আপনাদের নিষ্ঠা ও প্রচেষ্টা অবশ্যই সমাজে স্থিতিশীলতা, বোঝাপড়া এবং মানবিকতার ভিত্তি আরও সুদৃঢ় করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। যদি আমরা ব্যক্তি ও সমাজের ভেতরে শান্তির মানসিকতা ও প্রবণতা দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করতে পারি, তাহলে জাতীয় উন্নয়ন আরও শক্তিশালী হবে, সমাজে সহযোগিতা বাড়বে এবং আমরা একটি নিরাপদ, স্থিতিশীল ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব।’

রাজশাহীর পবা উপজেলার পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের পিস অ্যাম্বাসেডর শেখ মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন সম্পাদক ডা. বদিউল আলম মজুমদার, এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. দাউদ মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, ব্রিটিশ হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সিলর এবং গভার্নেন্স এন্ড পলিটিক্যাল টিম এর প্রধান টিমোথি ডাকেট।