ঢাকা : নন–এমপিও শিক্ষকদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘এই সরকারের আচরণ দেখে মনে হয় দেশের গরিব শিক্ষকরা যেন এই দেশের নাগরিকই নন।’
সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নন–এমপিও শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবিতে চলমান আন্দোলনে যোগ দিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় রিজভী আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবিকে ‘শতভাগ ন্যায়সঙ্গত’ উল্লেখ করে তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
রিজভী দাবি করেন, বিএনপি বিশ্বাস করে প্রধান উপদেষ্টা একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে সক্ষম হবেন। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টার আচরণ তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে।
তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারবেন বলে আমরা এখনও বিশ্বাস করি। কিন্তু সরকারের ভেতরের কিছু ব্যক্তির আচরণ দেখে মনে হয় তারা নিজেদের ক্ষমতা প্রমাণের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন।’
রিজভী বলেন, ‘গরিব মানুষের সন্তানদের পড়ান যেসব শিক্ষক, তারা নিজেই আজ অনাহারে–অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। অথচ সরকার তাদের সমস্যাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’
এসময় রিজভী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘শিক্ষকদের প্রতি এই উপেক্ষা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে গভীর সংকটে ফেলবে। তারা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তোলেন। তাদের অধিকার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।’
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা প্রায় ৪ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নন–এমপিও শিক্ষকরা বিগত ২৩ দিন ধরে রাজধানীতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। সম্মিলিত নন–এমপিও ঐক্যপরিষদের ব্যানারে শিক্ষকরা অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
শিক্ষকদের অভিযোগ, বছরের পর বছর সরকারকে অনুরোধ জানানো হলেও এমপিওভুক্তির কোনও বাস্তব অগ্রগতি হয়নি। ফলে তারা আর্থিক অনটন, সামাজিক সংকট ও পেশাগত অনিশ্চয়তায় ভুগছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলেন, সরকার পরিবর্তন হলেও তাদের দুঃখ–দুর্দশার পরিবর্তন হয়নি। এমপিওভুক্তি না পাওয়ায় তাদের মাসিক বেতন, ভাতা, চিকিৎসাসেবা ও অন্যান্য সুবিধার কোনও নিশ্চয়তা নেই।
শিক্ষকরা জানান, দাবিনামা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তারা বলেন, ‘আমরা বাড়ি ফিরে গেলে আবার আমাদের দাবি stone হয়ে যাবে। তাই এমপিওভুক্তির সরকারি ঘোষণার আগ পর্যন্ত আন্দোলন বন্ধ হবে না।’
নন–এমপিও শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে প্রেস ক্লাব ও আশপাশ এলাকায় সারাদিন ধরেই ছিল বিক্ষোভ, স্লোগান ও প্রতিবাদের বিভিন্ন কর্মসূচি।