Monday 24 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বোরকা পরে সিনেটে উপস্থিত অস্ট্রেলিয়ার নেত্রী, অধিবেশন স্থগিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৫ নভেম্বর ২০২৫ ০১:০৯

বোরকা নিষিদ্ধ করার অনুমতি না পাওয়ায় নিজেই এই পোশাকে সিনেট চেম্বারে হাজির হন অস্ট্রেলিয়ার ডানপন্থী রাজনীতিবিদ পলিন হ্যানসন। ছবি: সংগৃহীত

পার্লামেন্টে বোরকা পরে প্রবেশ করে দেশজুড়ে আবারও বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ডানপন্থী রাজনীতিবিদ ও ওয়ান নেশন দলের নেত্রী পলিন হ্যানসন। সোমবার (২৪ নভেম্বর) তিনি সিনেটে মুখ ঢাকা বোরকা নিষিদ্ধ করার জন্য একটি বিল উপস্থাপন করতে চাইলে অন্যান্য আইনপ্রণেতারা তাঁকে বাধা দেন। এর পরপরই তিনি একটি কালো বোরকা পরে আবারও পার্লামেন্টে ফিরে আসেন এবং নিজের আসনে বসেন।

সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, পলিন হ্যানসনের এই আচরণ পার্লামেন্টে উপস্থিত অন্যান্য আইনপ্রণেতাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। অস্ট্রেলিয়ান গ্রিনস দলের সিনেট নেতা লারিসা ওয়াটার্স এই ঘটনাকে ‘ধর্মীয় মানুষের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনের শামিল’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি এটিকে ‘চরম বর্ণবাদী’ কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

বিজ্ঞাপন

সরকারি দলের সিনেট নেতা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়ং একে ‘গভীরভাবে অসম্মানজনক’ বলে নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা যে রাজ্য থেকেই আসি না কেন, আমরা এই কক্ষে সব ধর্ম ও সব পটভূমির মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করি। তাই দায়িত্বশীল ও শালীন আচরণ করা আমাদের কর্তব্য।’

তবে পলিন হ্যানসন বোরকা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে সিনেটের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এটি পলিনের দ্বিতীয়বারের মতো সংসদে বোরকা পরিধান। এর আগে ২০১৭ সালেও তিনি নিরাপত্তা সমস্যা ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে বোরকার সম্পর্কের অভিযোগ তুলে একই ধরনের আচরণ করেছিলেন।

পরে ফেসবুকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে হ্যানসন জানান, তিনি ওই কাজটি করেছিলেন সিনেট কর্তৃক তাঁর প্রস্তাবিত বিল প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। তিনি লেখেন, ‘যদি পার্লামেন্ট বোরকা নিষিদ্ধ না করে, তাহলে আমি নিজেই এই দমনমূলক ও নিরাপত্তা-ঝুঁকিপূর্ণ পোশাক পরিধান করে দেখাব, যেন সবাই বুঝতে পারে বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যদি তারা আমাকে এটি পরতে দেখতে না চায়—তাহলে বোরকা নিষিদ্ধ করুক।’

হ্যানসন দীর্ঘদিন ধরে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে আসছেন। ২০১৬ সালে তিনি দাবি করেছিলেন যে অস্ট্রেলিয়া ‘মুসলমানদের দ্বারা প্লাবিত’ হচ্ছে এবং ইসলামকে তিনি অস্ট্রেলীয় সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ মতাদর্শ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।

সম্প্রতি একটি জরিপে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ান প্রধান রক্ষণশীল বিরোধীদল অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত থাকায় ওয়ান নেশন দলের জনসমর্থন বেড়ে ১৮ শতাংশে পৌঁছেছে। এদিকে সরকার নিয়োজিত এক দূত গত সেপ্টেম্বরে জানিয়েছিলেন, অস্ট্রেলিয়া দীর্ঘদিন ধরেই বেড়ে চলা ইসলামফোবিয়া মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর