ঢাকা: ঢাকা-৬ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশকে একটি আধুনিক, ন্যায়ভিত্তিক ও প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করাই তার দলের মূল লক্ষ্য।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর গোপীবাগে রাজধানী মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির আয়োজনে মতবিনিময় সভা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ইতোমধ্যেই রাষ্ট্র পুনর্গঠনে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব জনগণের সামনে উপস্থাপন করেছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে জনগণের দৈনন্দিন সমস্যা সমাধানে রাজনীতিবিদরা জবাবদিহির আওতায় আসবেন। একটি নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা গড়ে উঠলে সমাজ থেকে ভয়ভীতি, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন অপরাধ কমে আসবে। গত বছরের রাজনৈতিক সহিংসতার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বন্ধ এবং সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন।
ঢাকার পুরান ঢাকাকে উন্নত ও বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বেশ কয়েকটি অগ্রাধিকারমূলক পরিকল্পনা তুলে ধরেন ইশরাক।
তিনি বলেন, রাজধানী মার্কেট এলাকাসহ পুরো পুরান ঢাকা ভয়াবহ যানজট, ধুলাবালি এবং ফিটনেসবিহীন যানবাহনের দূষণে জর্জরিত। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার শীর্ষে থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অবস্থার পরিবর্তনে জরুরি সংস্কার আনতে হবে।
সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি অভিযোগ করেন, নির্মাণ বিধিমালা যথাযথভাবে প্রয়োগ না হওয়ায় শহরটি ঝুঁকিপূর্ণ নগরীতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পূর্ববর্তী সরকারের সময় দেশের বিপুল সম্পদ কয়েকজন ব্যবসায়ীর হাতে কেন্দ্রীভূত হয়েছে এবং প্রচুর অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। এসব সম্পদ দেশে থাকলে প্রান্তিক শ্রেণি; বিশেষ করে গার্মেন্টস শ্রমিকরা আরও উন্নত জীবনযাপন করতে পারতেন।’
তিনি আরও জানান, শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী, জ্ঞানভিত্তিক ও দক্ষতাভিত্তিক করে গড়ে তোলার মাধ্যমে উৎপাদনশীল অর্থনীতি তৈরির পরিকল্পনাও বিএনপির রয়েছে।
সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করে ইশরাক বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক স্বার্থে দেশকে বিভাজিত করেছে এবং ’৭১-এর চেতনাকে দলীয় সম্পত্তি বানানোর চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ কোনো দলের ছিল না; এটি ছিল জনগণের যুদ্ধ। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার পর নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে বীর বাঙালি। এই ইতিহাস কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়।’
নিজ এলাকার মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ইশরাক বলেন, ‘আমি আপনাদের এলাকার সন্তান। অতীতের মতো ভবিষ্যতেও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় লড়াই করে যাব, প্রয়োজনে জীবন দিয়েও।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রান্তিক জনশক্তি উন্নয়নবিষয়ক সহসম্পাদক অর্পনা রায় দাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ওয়ারি থানার যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির আহমেদ আরিফ, রাজধানী মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি বিপ্লব, সুভাষ প্রমুখ।