Tuesday 25 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ওষুধ শিল্পের লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া সহজীকরণের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৫ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:৩৫ | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:৩৯

এফবিসিসিআই এর সেমিনারে বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: দেশের স্বাস্থ্যসেবা, মেডিকেল ইকুইপমেন্টস এবং ওষুধ শিল্পের টেকসই উন্নয়নে যুগোপযোগী নীতিমালা ও সহজ লাইসেন্সিং প্রক্রিয়ার ওপর জোর দিয়েছেন উদ্যোক্তা ও নীতিনির্ধারকরা। বিশেষ করে বেসরকারি হাসপাতাল, ওষুধ এবং মেডিকেল ইকুইপমেন্টস শিল্পের লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়নে জটিলতা বিনিয়োগে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মত দিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব মন্তব্য করেন।

মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব হেলথ ইকোনমিকসের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো, এপিআই (Active Pharmaceutical Ingredients) শিল্পে পিছিয়ে থাকা। পাশাপাশি লাইসেন্সিং জটিলতা শিল্পের অগ্রযাত্রায় বড় প্রতিবন্ধক।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘একটি এপিআই শিল্প স্থাপনে একজন উদ্যোক্তাকে ৪৭টি সংস্থা থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। এটি বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করে।’ তিনি লাইসেন্সিং জটিলতা দূর করতে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালুর আহ্বান জানান।

মেডিকেল ইকুইপমেন্টস প্রস্তুতকারী জেএমআই গ্রুপের এমডি মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘যুগোপযোগী নীতিমালা ছাড়া মেডিকেল ইকুইপমেন্টস শিল্পের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।’ স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সুরক্ষা, ইকো-সিস্টেম উন্নয়ন এবং নিয়ম-নীতি আধুনিকায়নের ওপর জোর দেন তিনি।

ব্র্যাক হেলথ প্রোগ্রামের উর্ধ্বতন পরিচালক মো. আকরামুল ইসলাম মনে করেন, লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া সহজ না হলে স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধ ও মেডিকেল ইকুইপমেন্টস খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে না।

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক মো. আসরাফ হোসেন বলেন, ‘লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ইচ্ছাকৃত বিলম্ব করা হয় না। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কারণে কিছু সময় লাগে মাত্র।’ তিনি দ্রুততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে অধিদফতরের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান জানান, সরকার ইতোমধ্যে লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া সহজীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ‘কমপক্ষে তিন বছরের মেয়াদে লাইসেন্স দেওয়ার কাজ এগিয়ে চলছে।’ তিনি আরও বলেন, এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্থানীয় এপিআই শিল্প গড়ে তোলা, আমদানি নির্ভরতা কমানো এবং গবেষণা ও উন্নয়নে গুরুত্ব দিতে হবে।

বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর মহাপরিচালক গাজী এ কে এম ফজলুল হক বলেন, মেডিকেল ইকুইপমেন্টস শিল্পের জন্য স্বতন্ত্র নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে বিডা। ঔষধ প্রশাসনের মূল্যায়ন ও পরামর্শ নিয়ে তা বাস্তবায়িত হতে পারে।

এফবিসিসিআই-এর প্রশাসক মো. আবদুর রহিম খান স্বাগত বক্তব্যে বলেন, আয়সীমা অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিতের পাশাপাশি রোগীর চিকিৎসা ব্যয় যেন সামর্থ্যের মধ্যে থাকে—এ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) –এর মহাপরিচালক গাজী এ কে এম ফজলুল হক জানান, মেডিকেল ইকুইপমেন্টস শিল্পের জন্য স্বতন্ত্র একটি খসড়া নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বিডা। যা ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মূল্যায়ন, বিশ্লেষণ এবং পরামর্শের প্রেক্ষিতে বাস্তবায়ন হতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই’র প্রশাসক মো. আবদুর রহিম খান। তিনি বলেন, আয়সীমা অনুযায়ী সকল নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যয় যেন রোগীদের সাধ্যের মধ্যে থাকে সেই চেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানা এফবিসিসিআই’র প্রশাসক।