ঢাকা: আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভুয়া তথ্য মোকাবিলায় পর্নোগ্রাফি, জুয়ার বিজ্ঞাপন, সাইবার বুলিং এবং প্রতারকদের রিক্রুটমেন্ট ভিডিও দ্রুত শনাক্ত ও অপসারণে টিকটকের বিদ্যমান সিস্টেম আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে তাগিদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি)।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সিআইডির সদর দফতরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকের দুবাইস্থ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভায় এ তাগিদ জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ। এছাড়া সাইবার ইন্টেলিজেন্স, অপরাধ তদন্ত, সাইবার সুরক্ষা ও ডিজিটাল ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
টিকটকের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন- সোহাইব খান (আঞ্চলিক প্রধান, আইন প্রয়োগকারী আউটরিচ টিম, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া), ফেরদৌস মুত্তাকিন (দক্ষিণ এশিয়ার সরকারী সম্পর্ক প্রধান) ও আদিল শাহ (আইনি প্রধান, দক্ষিণ এশিয়া)।
সভায় ক্ষতিকর এবং বেআইনি কনটেন্ট দ্রুত টেকডাউন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ পুলিশ এবং টিকটকের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক কমিউনিকেশন চ্যানেল ও কার্যকর এসকেলেশন সিস্টেম প্রবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। ভুয়া তথ্য, পর্নোগ্রাফি, জুয়ার বিজ্ঞাপন, সাইবার বুলিং এবং প্রতারকদের রিক্রুটমেন্ট ভিডিও দ্রুত শনাক্ত ও অপসারণে টিকটকের বিদ্যমান সিস্টেম আরও শক্তিশালী করার বিষয়েও তাগিদ জানানো হয়েছে।
এসময় আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) কর্তৃক পরিচালিত সার্বক্ষণিক (২৪/৭) সাইবার পেট্রোলিং এর কার্যকরিতা বৃদ্ধিতে টিকটকের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণের উপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়। এছাড়াও কিশোর ব্যবহারকারীদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে সিআইডি বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করে। ঝুঁকিপূর্ণ চ্যালেঞ্জ ও স্টান্টে অংশগ্রহণ রোধে ইন-অ্যাপ সতর্কবার্তা, সেফটি ক্যাম্পেইন এবং অভিভাবক সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এসব ক্ষেত্রে মিসইনফরমেশন এবং এআই নির্ভর ডিপফেক কনটেন্ট দ্রুত শনাক্ত ও অপসারণের জন্য বিশেষ প্রটোকল চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়।
সিআইডি জানায়, সাইবার ফ্রড, হ্যারাসমেন্ট ও ইমপার্সোনেশন-সংক্রান্ত আইনগত আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় তথ্য চাওয়া হলে টিকটকের পক্ষ থেকে ডেটা প্রদান করার ক্ষেত্রে বিলম্ব হওয়ায় তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে দ্রুত, নির্ভরযোগ্য এবং সময়সীমাবদ্ধ তথ্য প্রাপ্তির বিষয়ে একটি স্পষ্ট গাইডলাইন প্রণয়ন করার অনুরোধ জানানো হয়।
সভা শেষে সিআইডি এবং টিকটক উভয় পক্ষই নিরাপদ ডিজিটাল পরিবেশ তৈরিতে যৌথভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। পাশাপাশি সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, তথ্য বিনিময় এবং কার্যকর সমন্বয় বৃদ্ধির বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত হয়।