ঢাকা: অনলাইন শপিং ব্যবসায় ঘিরে এবছর ফিশিং ও ভুয়া অফারের প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছ। ক্যাসপারস্কির ২০২৫ সালের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। ক্যাসপারস্কি জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইন স্টোর, ব্যাংক ও পেমেন্ট সিস্টেম সেজে তৈরি করা ৬৪ লাখের বেশি ফিশিং প্রচেষ্টা ব্লক করেছে। এর প্রায় অর্ধেকই অনলাইন ক্রেতাদের লক্ষ্য করে পাঠানো হয়েছিল। একই সময়ে গেমিং প্ল্যাটফর্মগুলোও সাইবার আক্রমণের বড় লক্ষ্য ছিল।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ক্যাসপারস্কি সিকিউরিটি নেটওয়ার্ক (কেওএসএন) জানায়, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইন স্টোর, ব্যাংক ও পেমেন্ট সিস্টেম-এর ছদ্মবেশে তৈরি করা ৬৩,৯৪,৮৫৪ টি ফিশিং প্রচেষ্টা ব্লক করেছে তারা। এর মধ্যে ৪৮.২ শতাংশই ছিল অনলাইন ক্রেতাদের লক্ষ্য করে। একই সময়ে গেমিং প্ল্যাটফর্মে হামলার চেষ্টার সংখ্যা ২ কোটিরও বেশি, যার মধ্যে শুধু ডিসকর্ডকেই ব্যবহার করে ১ কোটি ৮৫ লাখের বেশি হামলা শনাক্ত হয়েছে।
ব্ল্যাক ফ্রাইডে ঘিরে অনেক স্প্যাম মেইল পাঠিয়েছিলো সাইবার অপরাধীরা। নভেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহেই ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৫৩৫টি স্প্যাম ইমেইল শনাক্ত করেছে ক্যাসপারস্কি। এর মধ্যে ২ হাজার ৫৭২টি এসেছে সিঙ্গেলস ডে উপলক্ষে। এসব ইমেইলের বহু অংশই আগের বছরের টেমপ্লেট পুনর্ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে এবং অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট, আলিবাবা–সহ বিভিন্ন পরিচিত ব্র্যান্ডের নামে পাঠানো হয়েছে। বিনোদন প্ল্যাটফর্মকেও ছাড় দেয়নি সাইবার অপরাধীরা। ২০২৫ সালে ৮ লাখের বেশি নেটফ্লিক্স এবং ৫ লাখের বেশি স্পটিফাই–সংশ্লিষ্ট ফিশিং প্রচেষ্টা শনাক্ত করেছে ক্যাসপারস্কি।
ই–কমার্স ছাড়াও সাইবার অপরাধীরা গেমিং সিস্টেম, যেমন- স্টিম, প্লেস্টেশন, এক্সবক্স’কেও টার্গেট করেছে, যেখানে ২০ লাখ ৫৪ হাজারের বেশি ফিশিং প্রচেষ্টা ধরা পড়ে। গেমিং সফটওয়্যার সেজে ছড়িয়ে পড়া ম্যালওয়ারও বছরজুড়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। যার মধ্যে মোট ২ কোটি ১৮ হাজার ৮৯৭টি ম্যালওয়ার শনাক্ত করেছে ক্যাসপারস্কি। এর মধ্যে ডিসকর্ড থেকেই শনাক্ত হওয়া ম্যালওয়ার চেষ্টার সংখ্যা ১ কোটি ৮৫ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬৬, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ১৪ গুণ বেশি।
ক্যাসপারস্কির সিনিয়র ওয়েব কনটেন্ট অ্যানালিস্ট ওলগা অলতুখোভা বলেন, ‘এ বছরের তথ্য বলছে, সাইবার অপরাধীরা এখন পুরো ডিজিটাল দুনিয়া জুড়েই সক্রিয়। তারা অনলাইন শপিং, গেমিং, স্ট্রিমিং ও যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম সব জায়গায় ব্যবহারকারীর চলাচল লক্ষ্য করে নিজের কৌশল বদলায় এবং পরিচিত পরিবেশের ভেতরে লুকিয়ে থাকে। তাই ব্যবহারকারীদের জন্য অনলাইন কেনাকাটার ক্ষেত্রে নিয়মিত সতর্ক থাকা এবং বেসিক নিরাপত্তা অভ্যাস মানা এখন আরও জরুরি বলে মনে করছে ক্যাসপারস্কি।’