Wednesday 26 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ফয়েজ গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৬ নভেম্বর ২০২৫ ২১:৩৩ | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৫ ২১:৪৭

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের ফরিদপুরের সভাপতি শেখ ফয়েজ আহম্মেদ। ছবি: সারাবাংলা

ফরিদপুর: ফরিদপুরে জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যা চেষ্টা মামলার অন্যতম আসামি বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের ফরিদপুরের সভাপতি শেখ ফয়েজ আহম্মেদ (৪৮)-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকার শেখ মানিকের ছেলে।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ফরিদপুর শহরের আলীপুর গোলপুকুর ড্রীম শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেকে ফয়েজকে ধরে ফেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। পরে তাকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দিলে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ।

ছাত্রনেতারা জানান, ২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ফরিদপুরের তথাকথিত সাংবাদিক শেখ ফয়েজ সরাসরি ছাত্র আন্দোলনের বিরোধীতা করে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে থেকে ছাত্র-জনতার উপর ফরিদপুরের হামলায় অংশ নেন।

বিজ্ঞাপন

৫ আগস্টের পরে শেখ ফয়েজ পালিয়ে যায়। দীর্ঘদিন পালিয়ে থেকে চলতি নভেম্বর মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র অন্দোলনের ফরিদপুরের বির্তকিত চার নেতাকে ম্যানেজ করে তিনি ফরিদপুরে ফিরে আসেন। এছাড়া এই ফয়েজ জুলাই হামলার আসামি হয়েও সম্প্রতি তথ্য মন্ত্রনালয় থেকে কৌশলে সাহসী সাংবাদিকের পুরষ্কার গ্রহন করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সোহেল রানা বলেন, ‘সরকার কিভাবে এমন একজন আসামিকে পুরষ্কৃত করে তাতে আমরা হতবাক হয়ে যাই। ফরিদপুরের ছাত্র-জনতা এর মধ্যে মানববন্ধন করে ফয়েজের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। জুলাই হামলার আসামিকে পুরষ্কৃত করা জুলাইয়ে নিহতদের সঙ্গে বেঈমানির শামিল।’

তিনি বলেন, ‘কিভাবে এমন মানুষ সমাজে এখনো ঘুরে বেড়ায়। আমরা বাধ্য হয়ে আজ তাকে সামনে পেয়ে ধরে ফেলি। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।’

ফরিদপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক কাজী রিয়াজ বলেন, ‘২৪-এর আন্দোলনে এই শেখ ফয়েজ ছাত্র-জনতার উপর হামলা করেছে, সে ওই মামলার একজন অন্যতম আসামি। তার মতো একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে সাহসী সাংবাদিক পদক প্রদান করায় আমরা বিস্মিত হয়েছি এবং প্রতিবাদ জানিয়েছি। এরপর ফরিদপুর প্রেসক্লাব তাকে বহিষ্কারও করেছে। এত কিছুর পরও এই শেখ ফয়েজ প্রতিনিয়ত সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে যাচ্ছিল। ফরিদপুরের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করায় আমরা সন্তুষ্ট। ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা সব সময় আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছি এবং ভবিষ্যতেও করব।’

এদিকে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট নেতা এবং জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতা হত্যা চেষ্টা মামলার এই আসামিকে গত ১০ নভেম্বর একটি রেস্তরায় মতবিনিময় সভায় ফুলেল শুভেচ্ছা দিতে দেখা যায় ফরিদপুর ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক জনি বিশ্বাস, জেলা এনসিপির সদস্য হায়দার মোল্লা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহবায়ক তানিয়া আহম্মেদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠক তামিম হোসেন রনিসহ কয়েকজনকে।

অভিযোগ রয়েছে তারপর থেকে দীর্ঘদিন পলাতক এই আসামি ফয়েজ প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই নিয়ে শহরে বিভিন্ন মহলে আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেয়। জুলাই হামলার আসামিকে নিয়ে এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে ফরিদপুরের ছাত্র সমন্বয়ক ও সুধীমহল।

ফরিদপুরের সাংবাদিক এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘জুলাই হামলার একজন আসামিকে চার সমন্বয়কের এই কর্মকাণ্ড শহরে বির্তকের জন্ম দিয়েছে। এতে জুলাই আন্দোলনের স্বপক্ষের শক্তিকে বিব্রত করেছে। ফয়েজকে গ্রেফতার করায় আমরা স্বস্তি প্রকাশ করছি। আইন অনুযায়ী তার ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা করি।’

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহনকারীদের ওপর সরাসরি হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শেখ ফয়েজ। ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশ তাকে খুঁজছিল। পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। বুধবার সন্ধ্যায় তাকে ফরিদপুর শহরের আলীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর