ঢাকা: পূর্বাচলে ৩০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দে ক্ষমতা অপব্যবহার ও জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে আজ রায় ঘোষণা করা হবে।
গত রোববার (২৩ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন ১৩টি শুনানি শেষে এই তারিখ নির্ধারণ করেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুদকের পিপি মীর আহম্মেদ সালাম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এদিন এক আসামি খুরশীদ আলমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। দুদকের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আইনজীবী খান মো. মাইনুল হাসান লিপন। তিনি শেখ হাসিনাসহ আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন প্রত্যাশা করেন।
মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে আইনজীবী শাহীনুর রহমান যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি দাবি করে তার খালাস চান আইনজীবী।
পরে দুদকের আইনজীবী খান মাইনুল হাসান লিপন বলেন, ‘আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রত্যাশা করেছি। আশা করছি, আদালত থেকে সর্বোচ্চ সাজাটাই আসবে।’
প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে চলতি বছর জানুয়ারি মাসে ছয়টি মামলা করে দুদক। পরবর্তীতে সব মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এরইমধ্যে তিনটি মামলার বিচার শেষ হয়েছে। শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ ২২ জন পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
গত ১০ নভেম্বর শেখ হাসিনা পরিবারের তিন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এরপর ১৭ নভেম্বর আত্মপক্ষ শুনানিতে খুরশীদ আলম নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
এর আগে, গত ৩১ জুলাই এ তিন মামলাসহ পৃথক ছয় মামলায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা পরিবারের সাত সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আদালত।
এসব মামলায় শেখ পরিবারের অপর আসামিরা হলেন- শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক। শেখ পরিবার ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম এবং উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তারা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।