ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেছেন, গত ১৫ বছরে দেশে একটি বিকৃত ও অকার্যকর অর্থনৈতিক মডেল ‘হাসিনোমিক্স’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তার দাবি, এই মডেলের ফলে ব্যাংক ঋণখেলাপি, দারিদ্র্য ও বেকারত্ব বেড়েছে; সংকট গভীর হয়েছে শ্রমবাজারেও।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে শহিদ ডা. শামসুল আলম মিলনের ৩৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ৯০-এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘১৮-১৯ লাখ টাকার ঘটনা থেকে শুরু করে আজ শত শত কোটি টাকার সোনা উদ্ধার হচ্ছে। এসবই প্রমাণ করে, এরশাদ ও শেখ হাসিনা মিলে দেশে এমন এক অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি করেছেন, যা কাগজে ইকোনমিক্স হলেও বাস্তবে এটি ‘হাসিনোমিক্স’। এই মডেলে ব্যাংক থেকে যারা ঋণ নেবে, তারা টাকা ফেরত দেবে না এটাই নিয়মে পরিণত হয়েছে।’
তিনি দাবি করেন, গত দেড় দশকে ঋণখেলাপির সুযোগ এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে সাড়ে ছয় লাখ কোটি টাকা এখন খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে। ঋণ শোধ না করলেও নতুন ঋণ পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলো শেখ হাসিনার সরকার, বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘নিজের গড়া আদালত ও ট্রাইব্যুনালেই এখন শেখ হাসিনার বিচার হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আদালতে হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। প্লট দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত রায়ে আদালতকে প্রভাবিত করার কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
তিনি অভিযোগ করেন, অতীতে অবৈধ রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে দেশের আইনকে নিজের স্বার্থে প্রয়োগ করেছেন শেখ হাসিনা। তার মতে, বর্তমান রায়ে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের গল্প প্রচারের কোনো সুযোগ নেই।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, ‘দেশে বেকারত্ব বাড়ছে, কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের হিসাবে কোটি মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে চলে গেছে। শুধু উদ্যোগ নিলেই হবে না কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে, দৃঢ় হাতে পরিস্থিতি সামলাতে হবে।’
সভায় তিনি ডা. মিলনসহ ছাত্র আন্দোলনের শহিদদের স্মরণ করে বলেন, ‘তাদের আত্মত্যাগের মূল তাৎপর্য হলো একটি শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও শান্তিময় সমাজ গড়তে না পারলে তাদের আত্মা শান্তি পাবে না।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও সাবেক মন্ত্রী আমান উল্লাহ আমান। সঞ্চালনা করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ডাকসুর সাবেক ডিএস খায়রুল কবির খোকন।