ইবি: ‘যুবরাই লড়বে, সবুজ পৃথিবী গড়বে’-এই প্রতিপাদ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসে পলিথিন মুক্তকরণ ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন ভয়েস। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসের বটতলা থেকে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
এসময় সংগঠনটির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আব্দুল আল মোহিত, সভাপতি ইমতিয়াজ আহম্মেদ ইমন, সাধারণ সম্পাদক মিলন রানা মুরাদ, সাবেক সভাপতি এস. এম. সুইট, মাজিদুল ইসলাম উজ্জ্বলসহ অর্ধশতাধিক সদস্য।
‘নিজেদের ক্যাম্পাস নিজেরাই রাখবো পরিচ্ছন্ন’-স্লোগানে কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, ক্রিকেট মাঠ, শাহ আজিজুর রহমান হল, প্যারাডাইস রোড, জুলাই ৩৬ হল, ইবনে সিনা বিজ্ঞান ভবন এবং টিএসসিসি এলাকায় পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেন তারা। এসময় তারা মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাবস পরিধানসহ পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ময়লা-আবর্জনা, পলিথিন, অপ্রয়োজনীয় কাগজপত্র, বিস্কুটের প্যাকেটসহ বিভিন্ন বর্জ সংগ্রহ করে বস্তাবন্দি করে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলেন।
অংশগ্রহণকারী লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী রহিমা আক্তার বলেন, ‘আজকের এই অভিযানটা আমাদের সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে সাহায্য করছে। আমরা সবাই ক্যাম্পাস নোংরা করি। আমরা কোনোকিছু খেয়ে সেখানে খোসা বা খাবারের বাড়তি অংশটা ফেলে দেই। কিন্তু আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সচেতন নই, পরিচ্ছন্নতার কাজটা আমরা কেউই করি না। সেজন্য এই উদ্যোগটা নেওয়া হয়েছে। আমরা সবার মধ্যে এই বার্তাটা পৌঁছে দিতে চাই যেন আমরা নোংরা না করে ক্যাম্পাসকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবো।’
সংগঠনটির সভাপতি ইমতিয়াজ আহম্মেদ ইমন বলেন, ‘আসলে ক্যাম্পাস পলিথিনমুক্তকরণ বা পরিচ্ছন্নতা অভিযান এগুলো আমাদের মূল কাজ নয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা আর গবেষণার জন্য এসেছি। আমরা একজন শিক্ষার্থী এবং প্রথম শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দায়িত্ববোধ থেকে এই কাজটা করছি। আমরা প্রতিবছরই একটা নমুনা কাজ হিসেবে এটা করি, তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই কর্মসূচি। আমরা গ্রিন ভয়েস এজন্যই করি যাতে ভবিষ্যতে এই সংগঠন কারো না করতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই নমুনা কাজ করে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এই মেসেজটাই দিতে চাই যে, ক্যাম্পাসকে পলিথিনমুক্ত করতে হবে এবং যা পরিচ্ছন্ন আছে তার চেয়ে আরো বেশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা এবং মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর স্যারের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। তারা আশাবাদী এবং আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে তারা এই কাজে সহায়তা করবেন।’
সংগঠনটির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আব্দুল আল মোহিত বলেন, ‘পরিবেশের সবচেয়ে ক্ষতিকর যেটা, সেটার প্রধান কারণ হলো পলিথিন। যেখানে-সেখানে এই পলিথিন ফেলে দেওয়া হয়। এগুলো মাটির উর্বরতা নষ্ট করে, মাটির যে স্বাভাবিকতা আছে সেটা নষ্ট করে দেয়। এবং সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, এই পলিথিন যেখানে-সেখানে ফেলার কারণে আমাদের পুরো ক্যাম্পাসটা আসলে পলিথিনময় হয়ে গেছে। এখন আমাদের উচিত, আমরা যেখানে-সেখানে যেখানেই পলিথিন ফেলবো না। যেখানে একটা নির্দিষ্ট ডাস্টবিনের ব্যবস্থা আছে, সেখানে পলিথিনটা ফেলবো। সবার মধ্যে এই সচেতনতাটা জাগিয়ে তুলতে হবে, যেন তারা পরিবেশের গুরুত্বটা বুঝতে পারে এবং পরিবেশকে সুরক্ষিত রাখার জন্য নিজে থেকে কাজ করে।’