ঢাকা: রাজনৈতিক উত্তরণ দেশের অর্থনীতিকে যাতে বাধাগ্রস্ত না করে- সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা অর্থনীতির পথ রুদ্ধ করছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত দুর্বল। ব্যক্তি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি বহু বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। সুদের হারসহ নীতিগত দিক-নির্দেশনা এখনও পরিষ্কার নয়।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর পল্টনস্থ ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা’ বিষয়ক গ্রন্থ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দীর্ঘদিন ঢেকে রাখা খেলাপি ঋণের পাহাড়, প্রভিশন ঘাটতি আর তারল্য সংকট সব অসুখ এখন একে একে প্রকাশ্যে। একসঙ্গে ধরা পড়া এসব দুর্বলতা বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থিক স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। তবে সংকোচনমূলক নীতি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান কমিয়েছে। এখন স্থিতিশীলতা থেকে প্রবৃদ্ধির দিকে যাওয়ার সময় হলেও জ্বালানি, গ্যাস, ব্যাংকিং খাতের তারল্য ও ব্যবসায়িক প্রতিবন্ধকতা এসব বড় সংস্কার পিছিয়ে আছে।
পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করা, প্রশাসক নিয়োগ বা কিছু নিয়ম পূর্বের অবস্থায় ফেরানো এসবের বাইরে আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে আর কী করা হয়েছে- এমন প্রশ্ন তুলে ড. দেবপ্রিয় বলেন, সংস্কার ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ আনা স্বপ্নের মতো। কোনো সংস্কার ছাড়াই মাত্র ১৩ দিনে বিশাল বিদেশি বিনিয়োগ আনার ঘোষণা বাস্তবসম্মত নয়। প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া হঠাৎ বিদেশি বিনিয়োগ ঘোষণা ও নীতিগত অস্পষ্টতা বিনিয়োগ পরিবেশ আরো দুর্বল করছে।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, অংশীজনের অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতা ছাড়া বড় সিদ্ধান্ত টেকে না। ‘নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট’ এর আড়ালে এমন সিদ্ধান্ত স্বচ্ছতার ঘাটতি তৈরি করে। আগের সরকারের সময় যেসব বৈষম্যমূলক চুক্তি হয়েছে, সেগুলোর স্বচ্ছতা না থাকায় মানুষের সন্দেহ আরও বেড়েছে।